নাসিম রুমি: আজ সোমবার (০৪ নভেম্বর) তার জন্মবার্ষিকী। ১৯৫৫ সালের এদিনে রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এ গুণী শিল্পী।
বাংলা চলচ্চিত্রের গানে তার সুরের মোহনীয়তায় তাকে ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ বলা হতো। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের জাদুতে সংগীতপ্রেমীদের মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
মাত্র ছয় বছর বয়স থেকে সংগীতের তালিম নেয়া শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। মা ছিলেন সংগীতানুরাগী, আরেক কিংবদন্তি কিশোর কুমারের ভক্ত। প্রিয় শিল্পীর নামানুসারে তাই নিজের সন্তানের নাম রাখেন ‘কিশোর’। মায়ের সে স্বপ্ন পূরণ করতেই মূলত সংগীতাঙ্গনে তার পা রাখা।
১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্যদিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক জগতে পা রাখেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার হৃদয়ছোঁয়া গানের জন্য তিনি খুব অল্প সময়েই দর্শকদের হৃদয় জয় করে নেন।
বাংলা চলচ্চিত্রের গানে তিনি ছিলেন এক মহাসমুদ্র। তার বিখ্যাত গানের মধ্যে কয়েকটি হলো ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কারে দেখাব মনের দুঃখ গো’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘সবাইতো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘চোখ যে মনের কথা বলে’ ইত্যাদি।
অসংখ্য শ্রুতিমধুর এসব গানের জন্য তিনি গানে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন আটবার। এছাড়া, তিনি পাঁচবার বাচসাস পুরস্কার ও দুবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।
তার কণ্ঠে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, প্রেম-বিরহের মতো অনুভূতিগুলো। সংগীতের ক্যারিয়ারে ১৫ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর।
জনপ্রিয় এ ব্যক্তিত্ব হঠাৎই ২০২০ সালের ৬ জুলাই ভক্তদের কাঁদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে। তবে কালের স্রোতে প্রকৃতির কঠিন নিয়মে গায়ক চলে গেলেও তার শত শত গানের মাধ্যমে এখনও মানুষের অন্তরে বেঁচে আছেন গানের জগতের এ কিংবদন্তি।