পরীমণিকে সবাই কি শুধু নিজের স্বার্থেই ব্যবহার করেছে? প্রশ্ন তুলেছেন চিত্রনায়িকা দিলরুবা ইয়াসমিন রুহী। নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে বেশকিছু প্রশ্ন রেখেছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের প্রতি।
রুহী বলেন, অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোনও ঘটনা ঘটলে ইন্ডাস্ট্রি সবাই চুপ থাকতে পছন্দ করেন। অনেকের মতে এগুলো নিয়ে কথা না বললেই ভালো। আবার অনেকের মতে এগুলোর মধ্যে না যাওয়াই ভালো। কিন্তু কথা হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপারে অবজারভেশন তো সবারই রয়েছে। নিজস্ব মতামত তো শেয়ার করতেই পারি। এটাতো দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
ইন্ডাস্ট্রিতে নতুনদের আগমন সম্পর্কে বলেন, কাজ করতে যেয়ে অনেককে দেখেছি অনেক ভুলভাল মানুষের হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছে কিন্তু পরবর্তীতে নিজের বিদ্যা বুদ্ধি কাজ করতে যেয়ে নিজস্ব উপলব্ধি থেকে অনেকেই নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে এব্ং সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। আবার অনেককে দেখেছি অনেক ভালো সুযোগ পেয়ে কাজ শুরু করেছেন কিন্তু পরবর্তীতে আজেবাজে সংস্পর্শে এসে অনেক আজেবাজে জিনিসের সাথে যুক্ত হয়েছে। আরো অনেক ধরনের অপকর্ম নিজস্ব সুনাম হারিয়েছেন।
আমরা যখন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করি, বিভিন্ন মানুষের সাথে পরিচয় হয়। বিভিন্ন মানুষজনের কাছ থেকে আমরা বিভিন্ন জিনিস শিখি। এমন নয় যে সবাই সবকিছু শিখে এসেছে।
রুহী বলেন, একটা নতুন কাজ যখন আমরা শেষ করি আমরা কিন্তু একটার লার্নিং প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যাই এবং অনেক কিছু শিখি এবং পরবর্তী কাজটা যাতে আরো সুন্দর হয় সেজন্য আমরা নিজেকে তৈরি করি । জানি না নিজেকে সেভাবে কয়জন তৈরি করতে পারেন। কাজ করতে গেলে অনেকের সাথে অনেক ধরনের সম্পর্ক তৈরি হয়। কারো সাথে ভাই বোনের সম্পর্ক হয়, কারো সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক হয় ,কারো সাথে বাবা বা মায়ের মত সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্ক গুলোর কিন্তু একটা দায় আছে। এমনকি আমার যার সাথে চলি ফিরি তার জন্য কিন্তু আমার একটা দায় রয়েছে ।সে খারাপ কিছু করলে তাকে অ্যালার্ট করাটা ,বা কারেক্ট করা কিন্তু আমাদের দায়িত্ব। সে জায়গা থেকে আমরা আসলে কতটুকু দায়িত্ব পালন করছি। আমরা যদি কাউকে মা ডাকি তাহলে কিন্তু তার একটা সম্পর্কের বড় একটা দায়িত্ব রয়েছে।
এই অভিনেত্রী বলেন, আমরা কি আসলেই দায়িত্বটা পালন করি বা করতে জানি? বিপদ আসলে সবাই যে যার মত স্বার্থপরের মতো পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। অনেকেই এখন পরীমনিকে নিয়ে অনেক কিছু বলবে। সে যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি হয়তো সে পাবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন সে এতদিনে প্রচুর কাজ করেছে প্রচুর গুণী পরিচালক আর্টিস্ট এর সাথে কাজ করেছে, প্রচুর তার বন্ধুবান্ধব রয়েছে যারা তার সাথে ছবি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশংসাবাণী করতে দেখেছি তারা কি তাকে কখনোই তার এইসব অপকর্মের জন্য তাকে কারেক্ট করেনি? এটা কি তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে নি? বুঝলাম সে অশিক্ষিত, আজেবাজে মানুষের হাত ধরে এই ইন্ডাস্ট্রি তে এসেছে বাট তাকে কি শুধরানোর জন্য কেউ চেষ্টা করেনি আর যদি না করে থাকে কেন করেনি? একটা সুবুদ্ধি দেয়ার মত মানুষ কি তার চারপাশে ছিল না?
সবাই কি তাহলে শুধু তাকে নিজেদের স্বার্থে অপব্যবহার করেছে? তার অপরাধের ভাগ কেউ নেবে না কিন্তু তার তাকে দিয়ে যে ধরনের সুবিধা যেসব লোকজন পেয়েছে তারা কি তার পাশে থাকবে?
রুহী আরো বলেন, শুনেছি সে ৩০/৪০ টা চলচ্চিত্রে কাজ করেছে, তার অপরাধের শাস্তি যেমন আমরা তাকে দিচ্ছি, তার কাজের স্বীকৃতিটা যেন তাকে দিতে ভুলে না যাই।ইতিহাস ঘাঁটলে আমরা দেখতে পারি একজন খুনি অপরাধী তার জীবনের এক পর্যায়ে এসে নিজের উপলব্ধি থেকে নিজেকে পরিবর্তন করেছেন। কেউ কেউ মুনি ঋষি পর্যন্ত হয়ে গেছেন। নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নিজেরেই অপরাধী জীবন থেকে বের হয়ে, নিজেকে শুধরে নিক।নতুনভাবে তার জীবনে আমূল পরিবর্তন আসুক বা সুন্দর একটা জীবনের জন্য নিজেকে তৈরী করুক সেই প্রত্যাশাই আমার থাকবে।