নাসিম রুমি: পুলিশের কাছে বয়ান দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমেও মুখ খুললেন করিনা কপূর খান। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। নিজেকে কোনও মতে সামলেছেন। সেই অবস্থানেই তিনি জানিয়েছেন, দুই শিশুপুত্র এবং বাড়ির মহিলাদের বাঁচাতেই নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সইফ আলি খান। তাঁর কথায়, “আক্রমণকারী মারাত্মক হিংস্র। নৃশংস ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সইফের উপরে! এলোপাথারি কোপাচ্ছিল।”
করিনা আরও জানিয়েছেন, একরত্তি জেহ তখন ভয়ে কাঁপছে, কাঁদছে। সন্তানের জীবন বিপন্ন, কোন বাবা স্থির থাকতে পারেন! সইফও তাই ছোট ছেলেকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। লক্ষ্যে বাধা পাওয়ায় মরিয়া হয়ে ওঠে আক্রমণকারী। ছুরির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে অভিনেতার শরীর। চিকিৎসকদের মতোই করিনাও জানিয়েছেন, অভিনেতার শরীরে মোট ছ’টি জখম তৈরি হয়েছিল। সে রাতে সইফ যেন রক্তস্নান করে উঠেছিলেন! তবে তিনি সজাগ হয়ে যাওয়ার কারণেই হোক বা অন্য কোনও কারণে, পটৌদী প্যালেস থেকে কোনও কিছুই খোয়া যায়নি। অভিনেত্রীর কথায়, “আক্রমণকারী কিছুই চুরি করতে পারেনি।”
এর পরেই করিনা এবং জেহকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যান দিদি করিশ্মা কপূর। তবে তাঁর দিদি কখন, কী ভাবে খবর পেয়ে এসেছিলেন, সে কথা অবশ্য জানাননি করিনা। মাত্র বছর আটেকের তৈমুর ছিল বাবার সঙ্গে। সইফ নিজে স্থানীয় এক অটোয় উঠে বসেন। চালককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান। তৈমুরের হাত তখনও সইফের হাতের মুঠোয়। অভিনেতার পরিচয় জেনে নিমেষে তাঁদের নিয়ে তিনি পৌঁছে যান লীলাবতী হাসপাতালে। দ্রুত শুরু হয় সইফের চিকিৎসা।
আতঙ্কের রেশ নিয়েই প্রতি দিন ভোর হচ্ছে পটৌদী প্যালেসে। দ্রুত সুস্থতার পথে এগোচ্ছেন সইফ। আগের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ তিনি। কথা বলছেন, শুক্রবার অল্প হেঁটেছেন চিকিৎসকদের পরামর্শে। যদি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি এখনও। পর্যবেক্ষণকারী চিকিৎসকদের মতে, পরিস্থিতি বুঝে তাঁরা সইফকে হাসপাতাল থেকে ছাড়বেন। অন্য দিকে, করিনা সংবাদমাধ্যম এবং ছবিশিকারি এবং অনুরাগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন শাহরুখ খান, আলিয়া ভট্ট-সহ বলিউডের ঘনিষ্ঠজনদের। যাঁরা হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন সইফকে। পাশাপাশি প্রত্যেকের কাছে তাঁর বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সহানুভূতি থেকে যেন তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনে ঢুকে না পড়েন কেউ। তাঁরা নিজেদের সামলানোর চেষ্টা করছেন। প্রত্যেকে যদি তাঁদের সীমারেখা বজায় রাখেন তা হলে তাঁরা সকলের সহযোগিতায় দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।