আবেগ আর বিবেকের কারিগর বলা হয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেতকে। যিনি তার দুই অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ ও ‘পাঁচফোড়ন’ এবং বিশেষ নাটক নির্মাণের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন মানুষের ভেতর আবেগ ও বিবেক জাগানোর জন্য।
সেই সূত্রে এবারের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ হলো তার লেখা নতুন বই ‘আবেগ যখন বিবেকহীন’।টিভির বাইরে লেখালেখি প্রসঙ্গে হানিফ সংকেত বলেন, ‘‘মিডিয়াতে আমার শুরুটাই লেখালেখি দিয়ে। আর সেটা সত্তুর দশকের শুরু থেকে। দর্শকদের ভালোবাসার কারণে ‘ইত্যাদি’কে নিয়ে বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হয়, তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সবসময় লিখতে পারি না। কারণ গত ৩৪ বছর ধরেই আমাকে একটা সিডিউল মেনে চলতে হচ্ছে। একটি নির্দিষ্ট তারিখে ‘ইত্যাদি’ প্রচার হয় বলে আমাকে সেই তারিখের আগে অনুষ্ঠানটি নির্মাণ করে জমা দিতে হয়। তবে যত ব্যস্ত থাকি না কেন মনের ক্ষুধার তাড়নায় চেষ্টা করি সংখ্যায় বেশি না হলেও বছরে অন্তত একটি হলেও বই প্রকাশ করতে।’
‘আবেগ যখন বিবেকহীন’ বইটি সম্পর্কে হানিফ সংকেত বলেন, ‘আবেগ ও বিবেকের মধ্যে পার্থক্য হলো, বিবেক উচিত-অনুচিত, ভালো-মন্দ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আর আবেগ ভাবাবেগে কাজ করে। আবেগের বেগ বেশি হলে মানুষ ভুল করে, বিবেকও কাজ করে না তখন। ফলে মানুষ হয়ে পড়ে বিবেকহীন। আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, দেখার চোখই শুধু চোখ নয়। বিবেকেরও চোখ আছে। কিন্তু আমরা অনেকেই চোখ থাকতেও অন্ধ। যে কারণে অসংগতি, দুর্গতি, ভোগান্তি এবং অশান্তি লেগেই থাকে। কারণ বিবেকহীন মানুষ কখনও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সেই বিষয়গুলোই উঠে এসেছে এবারের প্রকাশনায়।’
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে লেখা কলাম এবং গ্রিস ও আমেরিকার মিনেসোটা রাজ্যে হানিফ সংকেতের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে সাজানো হয়েছে ‘আবেগ যখন বিবেকহীন’ গ্রন্থটি।
বইটি প্রকাশ করেছে অনন্যা প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইটি এখন বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়াও এবারের বইমেলায় অনন্যা প্রকাশনী থেকে বের হতে যাচ্ছে ‘হানিফ সংকেত রচনাসমগ্র-১’। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৪ পর্যন্ত হানিফ সংকেত রচিত কয়েকটি গ্রন্থের সংকলনে প্রকাশিত হবে এই রচনা সমগ্র। এই বইটিরও প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। বইটি খুব শিগগিরই মেলায় অনন্যা প্রকাশনীর স্টলে পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে উপন্যাসসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর হানিফ সংকেতের প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।