এ কে আজাদ: কাজী মোরশেদ। চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা। একজন ভালোমানের চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে তিনি বেশ প্রশংসিত ছিলেন। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র যেমন দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছে। তিনি নিজে সেরা প্রযোজক ও পরিচালক’সহ ৫টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন এক ছবিতেই। এই স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
তিনি ২০১৪ সালের ৩ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। প্রয়াত চিত্রপরিচালক কাজী মোরশেদের স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
কাজী মোরশেদ ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল, চট্টগ্রামের মিরসরাইতে জন্মগ্রহণ করেন। সত্তরের দশকে চিত্রপরিচালক এস এম শফির সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন কাজী মোরশেদ। এরপর তিনি বাংলাদেশ বেতার-এর প্রোগ্রাম পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
পরবর্তীতে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের সাথে, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও পরিচালক এ জে মিন্টুর ‘লালু মাস্তান’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন ।
কাজী মোরশেদ পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘ছলনা’। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৮৯ সালে । তাঁর পরিচালিত অন্যান্য ছবিসমূহ- সান্ত্বনা, প্রেম যমুনা, শুধু তুমি, নয়নের নয়ন, ঘানি, একই বৃত্তে। তিনি ‘দ্যা লক’ নামে একটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছিলেন।
চলচ্চিত্র পরচালনার পাশাপাশি তিনি একজন কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও সংলাপ রচয়িতা চিলেন। নিজের পরিচালিত প্রায় সব ছবিরই কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন কাজী মোরশেদ। এছাড়াও আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘পালাবি কোথায়’ ও ‘ম্যাডাম ফুলি’, মাসুদ পারভেজ পরিচালিত ‘ভালোবাসার মূল্য কত’সহ অন্যান্য পরিচালকদের বেশ কিছু চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন তিনি।
কাজী মোরশেদ টেলিভিশনের জন্য কয়েকটি নাটকও পরিচালনা করে ছিলেন।
১৯৯১ সালে ‘সান্ত্বনা’ চলচ্চিত্রের জন্য, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন কাজী মোরশেদ। ২০০৬ সালে তাঁর পরিচালিত কলুদের জীবন সংগ্রাম ও বাস্তবতার নিরিখে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘ঘানি’ ১২টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লভ করে। যারমধ্যে সেরা প্রযোজক ও পরিচালক’সহ ৫টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান কাজী মোরশেদ নিজে।
একজন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক ছিলেন কাজী মোরশেদ। তিনি একাধারে কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা ও প্রযোজক ছিলেন। একজন ভালোমানের চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে তিনি বেশ প্রশংসিত ছিলেন। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্র যেমন দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়েছে তেমনি রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছে।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের কাছে একজন ভদ্র-ভালো মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন কাজী মোরশেদ। অনন্তলোকে তিনি ভালো থাকুন- এই আমাদের প্রার্থণা।