ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ের ‘বুকের মধ্যে আগুন’ ওয়েব সিরিজটি নিয়ে আপত্তি তোলেন প্রয়াত তারকা সালমান শাহ’র পরিবার। সিরিজটির নির্মাতা তানিম রহমান অংশুকে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। নায়কের পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও সিরিজটি মুক্তি দিয়েছে হইচই।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাতে আট পর্বের সিরিজটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পর্বগুলোর নাম—‘ফিরে আসার গল্প’, ‘বন্ধু নাকি শত্রু’, ‘চেনা যখন অচেনা’, ‘স্নেহের ছলনা’, ‘উত্থান-পতন’, ‘প্রণয়ের পালাবদল’, ‘পতনের প্রস্তুতি’, ‘হত্যা নাকি আত্মহত্যা?’
ওয়েব সিরিজের গল্পটি আসলে কোন নায়কের জীবন থেকে নেওয়া, দর্শকের অনেকেই সেটি আন্দাজ করতে পারছেন। অনেকের মতে, এতে সালমান শাহ’র আদলে হাজির হয়েছেন ইয়াশ রোহান। তার স্ত্রীর (সামিরা) মতো দেখা গেছে তমা মির্জাকে। অন্যদিকে নায়কের মা নীলা চৌধুরীর মতো লেগেছে তানিয়া আহমেদকে, রাজনীতিক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের গেটআপে তৌকীর আহমেদ, প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের অবয়বে তারিক আনাম খানকে।
এ ছাড়াও গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোলাম মামুন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। বলা চলে, সালমান শাহ কেন্দ্রিক তৎকালীন সব চরিত্রকেই কাছাকাছি গেটআপে পর্দায় হাজির করিয়েছেন নির্মাতা।
এমনকি ওয়েব সিরিজের নামটিও প্রয়াত সালমান শাহ’র নামটিই মনে করিয়ে দিচ্ছে। কারণ, এ নায়কের অভিনীত শেষ সিনেমার নাম ‘বুকের ভেতর আগুন’।
সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী বর্তমানে লন্ডনে আছেন। সালমানকে নিয়ে ওয়েব সিরিজ নির্মাণের খবরটি শুনে তিনি খুবই বিস্মিত হয়েছেন। সে সময় নায়কের মা জানিয়েছেন, ‘পত্র-পত্রিকার খবরে জেনেছি, ওয়েব সিরিজটি সালমানকে নিয়ে বানানো হয়েছে।
এমনকি সিরিজের নামটাও সালমানের সিনেমা থেকে নেওয়া। তার মৃত্যু নিয়ে ২৭ বছর ধরে মামলা চলছে, এখনও রায় হয়নি। এর মধ্যে কেন সিরিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে? শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে তারা আমাদের সঙ্গেও কোনো আলোচনা করেননি।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সালমান খুন হয়েছে, খুনের মামলা নিয়ে তামাশা করা যায় না। সিরিজে হত্যারহস্য না বলে মৃত্যুরহস্য বলা হচ্ছে। এতে আমাদের পারিবারিক সম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
নীলা চৌধুরী যোগ করেন, ‘ছেলে হত্যার বিচারের দাবিতে ২৭ বছর ধরে মামলা টানছি। কারও সিরিজের চিত্রনাট্য হওয়ার জন্য মামলা টানছি না।’
প্রসঙ্গত, বাংলা চলচ্চিত্রের নক্ষত্র সালমান শাহ্’র মৃত্যুর রহস্য আজও ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে। যদিও অভিনেতার মৃত্যুকে আইনের সংস্থাগুলো বলছে আত্মহত্যা। তবে অভিনেতার ভক্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা সেটি মেনে নিতে পারেননি। তাদের দাবি- আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাকে।