নাসিম রুমি: যে তারকার কাছে বয়স যেন শুধুই একটি সংখ্যা। অসামান্য অভিনয় দক্ষতায় তার নামের পাশে জুড়ে গেছে ‘থালাইভা’ খেতাব। চেহারা ‘নায়কসুলভ’ নয়। মুখে কাঁচা-পাকা দাড়ি। মাথায় টাক। কিন্তু এই মানুষটির সিনেমা মুক্তি পেলে দক্ষিণ ভারতে যেন হইচই পড়ে যায়।
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতাদের একজন রজনীকান্ত। বর্তমানে প্রতিটি ছবির জন্য তিনি পারিশ্রমিক নেন ৫০ থেকে ৬০ কোটি রুপি। তবে এতো নাম-যশ-খ্যাতি পাওয়া তামিল তারকা রজনীকান্ত হয়ে ওঠার গল্পটা খুব একটা সহজ ছিল না।
পেশাগত জীবনে তামিল সিনেমার মহাতারকা হলেও তার জন্ম এক মারাঠি পরিবারে। বাবা রামোজি রাও গায়কোয়াড় ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল আর মা জীজাবাঈ ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রজনীকান্ত ছিলেন সবার ছোট। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে কুলি, দিনমজুর ও বাস কন্ডাক্টরের মতো কাজও করতে হয়েছে এ অভিনেতাকে। এসবের পাশাপাশি পাড়ার নাটকেও চালিয়ে যেতেন শখের অভিনয়।
পরবর্তী সময়ে এক বন্ধুর সহায়তায় মাদ্রাজ ফিল্ম স্কুলে অভিনয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নেন তিনি। সেখান থেকেই নজরে পড়েন সে সময়ের খ্যাতিমান পরিচালক কে. বালাচরণের।
১৯৭৫ সালে বালাচরণের ‘অপূর্ব রাগাঙ্গল’ সিনেমার মাধ্যমে তামিল সিনেমায় অভিষেক ঘটে ‘থালাইভা’র। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন তরুণ রজনীকান্ত।
এরপরও দক্ষিণী সিনেমায় নিজের শক্ত অবস্থান গড়তে তাকে করতে হয়েছে কঠোর পরিশ্রম। প্রথমদিকে খ্যাতিমান অভিনেতা কমল হাসানের সঙ্গী হিসেবেই সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। পরবর্তী সময়ে বেশ কিছু সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করে নেন এ মহানায়ক।
ক্যারিয়ারের প্রথম দিন থেকেই তার অভিনয় জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন সবাইকে। তার প্রথম জীবনের মতোই ছিল তার প্রথম দিকের সিনেমাগুলোর চরিত্র। অত্যাচারিত কৃষক, দিনমজুর ও কুলির চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে জায়গা করে নেন দর্শকের মনে।
১৯৭৮ সালে ‘ভৈরবী’ সিনেমায় প্রথমবার নায়কের চরিত্রে অভিষেক হয় তার। তামিল ইন্ডাস্ট্রি ছাড়াও তেলেগু, কন্নড়, হিন্দি, সিনেমাতেও নিজের অভিনয় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন রজনীকান্ত। তবে নিজের মাতৃভাষা মারাঠি হওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোনো মারাঠি সিনেমায় অভিনয় করেননি তিনি। ১৯৮৩ সালে ‘আন্ধা কানুন’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পা রাখেন রজনী।