স্বর্ণলতা বলেন, ‘হুমায়রা হিমু আপুর সঙ্গে আমি দুটি ধারাবাহিক নাটক করেছি। একটি ‘‘বকুলপুর’ আরেকটি ‘স্বপ্নের রানী’।
যে হঠাৎ করে কেন এই কথা বলছে। ওই দিন আমাদের পরিচালক থেকে শুরু করে মেকাআপ রুমে অনেকেই ছিল। তারপর আপুকে আমরা জিজ্ঞেস করছিলাম কেন এসব কথা বলছো। তখন আপু বলেছিল, ‘মানুষের তো অনেক কিছু হতে পারে। আমার না আর বাঁচতে ইচ্ছে হচ্ছে না। আমি যদি মরে যাই তাহলে এগুলো অনাথ আশ্রমে দিয়ে যেতে চাই।’ তখন আমরা আপুকে অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করি। যতদিন শুটিং থাকতো আপুকে খুব ব্যস্ত রাখতাম।
এ অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘হিমু আপুর মধ্যে অসাধারণ কিছু দক্ষতা ছিল। অদ্ভুত সব কাজ করতো। দেখা যেত রাতে শুটিং শেষ করে আবার পরের দিন যখন সেটে আসতো আগের দিনের মেকাপের উপর টাচ আপ করে চলে আসতো। অনেক মজার জিনিস আমরা আপুর কাছ থেকে পেতাম। আপু গাড়ি চালাতে চালাতে মেকাআপ করতো। একদিন আপু একটা গহনা আনেনি, কিন্তু সেটা লাগবেই। সেটেই একটা তার দিয়ে সুন্দর একটা গলার সেট তৈরি করে ফেললো। সেটা দিয়েই শুটিং হয়েছে। আমরা তার তৎক্ষণাৎ কাজ দেখে অবাক হলাম। তার কাছ থেকে গাড়ি চালানো শিখতে চাইতাম। চেষ্টা করতাম আপুকে ব্যস্ত রাখার জন্য।’
‘স্বপ্নের রানী’ নাটকের শুটিং শেষ হয়েছিল হিমুর মৃত্যুর কিছুদিন আগেই। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে স্বর্ণলতা বলেন, ‘আপু মারা যাওয়ার ১০-১২ দিন আগেও আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। স্বপ্নের রানী ধারাবাহিকের শেষের দিকের শুটিং ছিল। শেষ দিনে আপুকে একটু অন্যমনস্ক লেগেছিল। কিছুটা অন্য রকম। কারণ আপু তো অনেক অভিজ্ঞ। যেকোনো চিত্রনাট্য একবার পড়লেই আপুর হয়ে যেত, খুব সুন্দর করে দৃশ্যটা করে ফেলতে পারতো৷ রি-টেক লাগতো না। কিন্তু সেদিন আপুর সিকোয়েন্স করতে বারবার মিসম্যাচ হচ্ছিল।
দৃশ্যটা করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছিল। শেষের দিকে আপু ভিগো নিয়ে ব্যস্ত কম থাকতো। শুটিং সেটটা তো আমাদের পরিবার, সবার সঙ্গে আপুর সম্পর্ক ভালো ছিল। সবসময় হাসিখুশি প্রানবন্ত থাকতো। অনেক আত্নবিশ্বাসী ছিল। আপু যেদিন মারা যায় সেদিন স্বপ্নের রাণীর শেষ পর্ব প্রচারিত হয়েছে।
হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর খবরে মানতে পারেনি অনেক তারকারাই। শোকাহত ছিল পুরো শোবিজ অঙ্গন।