মৃত্যুর ২৮ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও জনপ্রিয়তা এতটুকু কমেনি স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহর। আজও এই নায়কের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি তার ভক্ত-অনুরাগীরা। সালমান শাহর খুব কাছের একজন মানুষ ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা তুষার খান।
মৃত্যুর আগের দিন ব্যাকুল হয়ে তাকে খুঁজেছিলেন সালমান। তবে শেষ দেখা হয়নি তাদের। এখনও সেই আক্ষেপ মনের গভীরে রয়ে গেছে তুষারের। অভিনেতার ভাষ্য, সেদিন আমার সঙ্গে দেখা হলে এমন দুর্ঘটনা হয়তো ঘটতো না।
সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে এমনটাই জানালেন তুষার। অভিনেতা বলেন, সালমানের যখন মন খারাপ থাকতো তখন প্রায়ই আমার সঙ্গে কথা বলতো। আমাকে টেলিফোনে বলতো, আমার ভালো লাগছে না। আমি তোমার বাসায় আসব। ওর ফোন পেয়ে আমি কোথাও আর বের হতাম না। আমরা একসঙ্গে নানান বিষয়ে কথা বলতাম। আড্ডা দিতাম। এতে অনেকেটাই ফ্রেশ অনুভব করতো সালমান। পরদিন আবারও ফুরফুরে মেজাজে শুটিং সেটে দেখতাম ওকে।
তিনি আরও বলেন, সালমান যেদিন মারা যায় তার আগের দিন আমি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরি। বিকেলে আমাদের ‘প্রেমপিয়াসী’ সিনেমার ডাবিংয়ের কাজ ছিল। ডাবিংয়ে যাওয়ার আগে একটি পার্সেল আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে দিতে যাই আমি। আসলে সেদিন এত ক্লান্ত ছিলাম যে, ঘুমিয়ে পড়ি সেই আত্মীয়ের বাড়িতেই। ঘুমিয়ে পড়ায় তারাও আমাকে আর ডাকেনি।
তুষার বলেন, রাত পৌনে ১১টায় ঘুম ভাঙার পর সেদিন আর ডাবিংয়ে যাইনি। পরদিন সকাল বেলা নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামের মেয়ে আন্নি আমাকে ফোনে জানায়, সালমান সুইসাইড করেছে। আমি তখন বিষয়টা মেনে নিতেই পারিনি। আমি পুনরায় জানতে চাই, ওকি মারা গেছে। উত্তরে বলে, হ্যাঁ, এখন মেডিকেলে আছে। আমি দ্রুত সেখানে চলে যাই।
আফসোস করে অভিনেতা বলেন, হাসপাতালে পরিচালক রেজা হাসমত আমাকে দেখে বলেন, কালকে আপনি কই ছিলেন? আমি বললাম কেন? তখন রেজা জানান, গতকাল ডাবিংয়ের সময় সালমান খুব আপসেট ছিল। আপনাকে অনেক খুঁজেছে। ফোন করেছে। ফোনে না পেয়ে আপনার বাসায় লোক পাঠিয়েছে।
এমন কথা শোনার পর এখন প্রায়ই আমার মনে হয়, ও হয়তো সেদিনও আমার কাছে কিছু কথা শেয়ার করতে চেয়েছিল। আমার সঙ্গে কথা বলার পর ওর মনটা আবার ফ্রেশ হয়ে যেত। এমন দুর্ঘটনা হয়তো ঘটতো না।
আমি ওইদিন কেন আত্মীয়ের বাসায় ঘুমিয়ে পড়লাম! এই কষ্টটা আমার সারাজীবন থাকবে। হয়তো আমি সেদিন ঘুমিয়ে না পড়লে আজও সালমান শাহ থাকতো আমাদের মাঝে। এত দর্শকের মন ভেঙে যেত না!