ভারতের চলচ্চিত্র জগতের ধ্রুবতারা বলা হয় দিলীপ কুমারকে। তিন বছর আগে আজকের এই দিনে না ফেরার দেশে চলে তিনি।মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মৃত্যুর আগের দিন বিকালে সেখানে তাকে দেখতে যান স্ত্রী সায়রা বানু। তিনি গণমাধ্যমে জানান, দিলীপ কুমার সুস্থতার পথে। তাকে বাড়ি নেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের অনুমতির অপেক্ষায়। কিন্তু অস্থায়ী বাড়িতে আর ফেরা হয়নি দিলীপ কুমারের।
২০২১ সালের ৭ জুলাই তিনি চলে যান চিরস্থায়ী ঠিকানায়। এদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মুম্বাইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন।
হিন্দি সিনেমার জগতে এই অভিনেতা দিলীপ কুমার নামে পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান। তাহলে কীভাবে তিনি দিলীপ কুমার হলেন? ধর্ম পাল্টে? একেবারেই নয়। তিনি মুসলমান ধর্মের অনুসারী। ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের পেশোয়ারে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্ম হয়েছিল দিলীপ কুমারের। তখন তার নাম রাখা হয় মুহাম্মদ ইউসুফ খান।
অভিনেতার বাবা লালা গোলাম সারওয়ার একজন ফল ব্যবসায়ী ছিলেন, যিনি পেশোয়ার ও দেওলালীর মধ্যে ফলের বাগানের মালিক ছিলেন। তার মায়ের নাম আয়েশা বেগম। তিনি নাসিকের (মহারাষ্ট্র) কাছাকাছি মর্যাদাপূর্ণ দেওলিয়ার বার্নস স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন।
১৯৩০ সালে শেষ সময়ে ১২ সদস্যের পরিবার নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান দিলীপ কুমার। ১৯৪০ সালে অভিনেতা তাদের পুনের বাড়ি ছাড়েন, যেখানে তিনি একজন ক্যান্টিন মালিক এবং একজন শুষ্ক ফল সরবরাহকারী হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৪৩ সালে ‘বম্বে টকিজ’-এর মালিকানাধীন অভিনেত্রী দেবিকা রানী ও তার স্বামী হিমাংশু রাই পুনের অন্ধ সামরিক ক্যান্টিনে দিলীপ কুমারকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। পরের বছর ১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ চলচ্চিত্রটির জন্য দিলীপকে প্রধান চরিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেন দেবিকা রানী ও হিমাংশু রাই।
এই চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউড শিল্পে প্রবেশ করেন দিলীপ কুমার। তার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান হলেও হিন্দি লেখক ভগবতি চরণ বর্মা পরবর্তীতে তার রুপালি পর্দার নাম দেন দিলীপ কুমার। সেই থেকে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত এই নামেই ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পরিচিত ছিলেন।