কলকাতার শোবিজ ইন্ডাস্ট্রির রূপটান শিল্পী হেমা মুন্সী। মডেলদের দেখছেন খুব কাছ থেকে। পল্লবী দে, বিদিশা দে মজুমদার, মঞ্জুষা নিয়োগীর পরে রবিবার একইভাবে ঝুলন্ত মরদেহ মিলেছে সরস্বতী দাসেরও। সরস্বতী পেশায় মডেল এবং রূপটান শিল্পী।
বলেছেন, ‘মাধবীলতা, নয়নিকারা প্রচণ্ড নিয়ম মেনে চলতেন। নিজেদের যত্ন নিতেন। পেশার প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। এই প্রজন্মের মধ্যে সেই মানসিকতা দেখতে পাই না। ’
সম্প্রতি একটি বড় বাজেটের বিজ্ঞাপন-ছবিতে রূপটানের কাজ করেছেন হেমা। বিজ্ঞাপনের মুখ্য মডেল সৌরভ গাঙ্গুলি। তাকে ঘিরে মডেল দুনিয়ার ভাষায় এক ঝাঁক ‘ক্রাউড মডেল’। ‘ভিড়’ বাড়াতে সাধারণত যাদের ব্যবহার করা হয়। হেমার কথায়, ‘এদের দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, এত ভিড়ের মধ্যে ক’জন নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে? বেশির ভাগই একটা-দুটো কাজের পরেই হারিয়ে যায়। ’
একই সঙ্গে তার দাবি, ‘বেশির ভাগেরই কাজে একেবারে মন নেই। হয় হাতের দামি ফোনেই সারাক্ষণ ব্যস্ত, নয়তো এসেই বলতে থাকে যাব যাব। অমুক সময়ে ছেড়ে দিতে হবে। কাজ আছে। ’ রূপটান শিল্পীর কৌতূহল, ‘এরা কি জৌলুসের লোভে মডেলিংয়ে এসেছে? মডেলিং এদের ধ্যান-জ্ঞান নয়। কথা শুনে মনে হয়, এরা একাধিক বিষয়ে যুক্ত। ’
এই প্রজন্মের মডেলদের বিরুদ্ধে হেমার অনুযোগ আরো। তার বক্তব্য, অবসরে এদের বেশির ভাগের হাতে সারাক্ষণ হয় জ্বলন্ত সিগারেট, নয়তো গাঁজা! এ ব্যাপারে তিনি মূলত আঙুল তুলেছেন শহরতলি থেকে আসা ছেলে-মেয়েদের দিকে। হেমার কথায়, ‘শহরে যারা পরিবারের সঙ্গে থাকে, তারা কিন্তু এত নেশা করে না। এতটা বিশৃঙ্খলও নয়। কারণ তাদের শাসন করার জন্য তাদের পরিবার থাকে। যারা বাইরে থেকে শহরে কাজ করতে আসছে, তারাই ভেসে যাচ্ছে। শেষে সব দিক সামলাতে না পেরে ফুরিয়ে যাচ্ছে। ’
অভিজ্ঞ রূপটান শিল্পী অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আর এক বিশেষ শ্রেণির মানুষের দিকে। যারা নাকি স্বপ্ন দেখিয়ে তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আসছে এই পেশায়। হয়তো কাজও জুটিয়ে দিচ্ছেন। প্রথম প্রথম বেশ কাজ। আস্তে আস্তে তাতে ভাটা। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে হতাশ হয়ে পড়ছেন উঠতি ‘ক্রাউড মডেল’রা। তখন কিন্তু তাদের সামলাতে সেই স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা আর নেই!