নাসিম রুমি: দেশের স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী সাদি মহাম্মদ ও নৃত্যশিল্পী শিবলী মহাম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার ৮ জুলাই ভোর ৬টায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। জেবুন্নেছা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সলিমউল্লাহর অর্ধাঙ্গিনী ছিলেন।
মায়ের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ছেলে সাদি মহম্মদ। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে হুইল চেয়ারে বসেই স্বাভাবিক জীবন পার করছিলেন মা। আমাদের ১০ ভাই-বোনকে একা মানুষ করেছেন তিনি। মা ছিলো আমার কাছে অন্তহীন আকাশ। যে আকাশে আমি পাখা মেলে দিতাম পাখির মতো। সেই আকাশটা আজ থেকে আর নেই। সবাই মায়ের জন্য দোয়া করবেন।’
রোববার বাদ আছর মোহাম্মদপুরে জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহর জানাজা হবে। এরপর মোহাম্মদপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন তিনি।
দুই ভাই সাদি মহম্মদ ও শিবলী মহম্মদের শিল্পী হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তাদের মায়ের। তাদের মা ছিলেন সংস্কৃতিমনা। তিনি গান-বাজনা পছন্দ করেন। তাই চাইতেন, তার সন্তানদের মধ্যে কেউ যেন বড় শিল্পী হয়। দুই ভাই মায়ের সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন। শিবলী মহম্মদের বাবা শহীদ সলিমুল্লাহ ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। শুরু থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা
একাত্তরের ২৩ মার্চ তিনি মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে নিজের বাসার ছাদে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনারা সাদি-শিবলীদের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে শহীদ সলিমুল্লাহকে হত্যা করে। তার স্মরণেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে তার নামে।
শহীদ সলিমুল্লাহর মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরেন তার স্ত্রী বেগম জেবুন্নেসা সলিমুল্লাহ। কোটিপতির বাড়িতে পুত্রবধূ হয়ে এসে তিনি অসহায় দিনগুলোতে সেলাই করে সংসার চালিয়েছেন! মানুষ করেছেন ছয় পুত্র আর চার কন্যাকে। যাদের মধ্যে দেশের সাদি মহম্মদ ও শিবলী মহম্মদ উল্লেখযোগ্য।