১৪ বছর আগে এই দিনে মারা যান বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অ্যাকশন হিরো এস এম আসলাম তালুকদার মান্না। চিকিৎসকদের অবহেলায় এই সুপারস্টারের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ ছিল। পরে বিচার বিভাগীয় তদন্তেও তা প্রমাণিত হয়। ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচারও শুরু হয়। কিন্তু আসামিরা উচ্চ আদালতে যান। উচ্চ আদালত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। এ কারণে বিচারকাজ আর এগোতে পারেনি।
মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বিচারাধীন ছিল। সম্প্রতি মান্নার পরিবার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে মান্নার স্ত্রী শেলী মান্নার সঙ্গে কয়েক দফা মোবাইলে যোগায়োগ করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জাহাঙ্গীর হোসেন (দুলাল) বলেন, ‘এটি একটি আলোচিত মামলা। কিন্তু মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির বিচার হচ্ছে না। স্ট্রে অর্ডার বাতিলের জন্য মান্নার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে বলে শুনেছি।’
তিনি বলেন, মান্না মানে একটা ইন্ডাস্ট্রি। তার ছবি ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে। অথচ তার মামলাটি এতদিন স্থগিত রয়েছে। উচ্চ আদালত স্ট্রে অর্ডার তুলে নিলে মামলার বিচার আমাদের কোর্টে শুরু হবে। আমরা প্রস্তুত আছি। অপেক্ষায় আছি বিচারকাজ শুরুর। যদি স্থগিত আদেশ তুলে দেয় আমাদের কাছে মামলা আসলে সাক্ষী হাজির করে যত দ্রুত সম্ভব মামলার বিচার শেষ করবো।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বুকে ব্যথা অনুভব করায় ভোর রাত ৪টায় মান্না ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসেন সকাল ৯টায়। চিকিৎসা দেরিতে শুরু হওয়ায় ‘অ্যাকিউট মায়োকারডিয়াল ইনফ্রাকশনে’ আক্রন্ত হন। পরে তার মৃত্যু হয়।
কিন্তু চিকিৎসকের অবহেলায় মৃত্যুর করে মান্নার স্ত্রী শেলী কাদেরের ভাই রেজা কাদের ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ১৩ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান সিদ্দিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ৬ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
২০০৯ সালের ১৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন তৎকালীন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক ফিরোজ আলম। এরপর ১, ২ ও ৩ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য থাকা দিনেই সংশ্লিষ্ট বিচারক বদলি হয়ে যান। থেমে যায় সাক্ষ্য গ্রহণ। এরপর আসামিরা মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন-ডা. মো. এনায়েত হোসেন শেখ, ডা. জহির উদ্দিন মাহমুদ ইলিয়াস, ডা. মোমেনুজ্জামান, ডা. ফাতেমা, ডা. মাইনুল ইসলাম মজুমদার ও ডা. খন্দকার মাহবুব হোসাইন।