এ কে আজাদ: চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে, একটি অতি পরিচিত নাম, সুপরিচিত মুখ, অতি জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ সম্মানিত ব্যক্তিত্ব । বাংলাদেশের সকল মানুষেই তাঁকে, তারকাখ্যাতি সম্পন্ন চিত্রনায়ক ও একজন সাদা মনের সমাজ সেবক হিসেবে চিনেন, জানেন।
আজকের সুবিখ্যাত ব্যক্তিত্ব ইলিয়াস কাঞ্চন এক সময় ছিলেন চলচ্চিত্রের সর্বাধিক জনপ্রিয় চিত্রনায়ক। ছুঁয়েছেন সাফল্যের শীর্ষ স্থান। উপহার দিয়েছেন হিট-সুপারহিট সব চলচ্চিত্র। ভেসেছেন তুমূল জনপ্রিয়তার শ্রোতে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বাণিজ্যসফল চলচ্চিত্র ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র সফল নায়ক তিনি। কোন রকম অশালীন বা বিতর্কিত ছবিতে তাঁকে অভিনয় করতে দেখা যায়নি।
বহু বাণিজ্যসফল ছবি ও তাঁর অভিনয় প্রতিভা দিয়ে, আমাদের চলচ্চিত্রশিল্পকে করেছেন সমৃদ্ধ।
“সামাজিক বা রাজনৈতিক ‘কমিটমেন্ট’ ছাড়া কোন শিল্পী বা শিল্প পূর্নাঙ্গ হতে পারে না”- এই নীতিকে অনুসরণ করে, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে, এক সময় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন সমাজ সেবায় ব্রতী হন। বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে একমাত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনই, একটি সুনির্দিষ্ট সামাজিক প্রত্যয় নিয়ে নিরলস কাজ করে চলেছেন।
এ দেশের সড়ক পথে নিয়ম না মানার ব্যাধির বিরুদ্ধে, মানুষের সচেতনতা গড়ে তুলতে, সড়কের অপঘাত থেকে সাধারণ মানুষকে উদ্ধারের প্রচেষ্টায়, “নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)” নামের সংগঠনের মাধ্যমে দীর্ঘ ২৮ বছরধরে, সারা বাংলাদেশের জনমানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, যিনি প্রায় চার দশক ধরে উজ্জ্বল করে রেখেছিলেন বাংলা সিনেমার রূপালী পর্দা।
যে চলচ্চিত্র থেকে তিনি পেয়েছেন অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা, পেয়েছেন জস-তারকাখ্যাতি, সেই চলচ্চিত্রের মানুষদের কল্যাণে, তাদের ভালোর জন্য কিছু একটা করার নিমিত্তে, এবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে, সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, নির্বাচিত হওয়ার জন্য।
চলচ্চিত্র থেকে তাঁর কিন্তু আর কিছু পাবার নেই, তিনি অনেক পেয়েছেন চলচ্চিত্রশিল্প থেকে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী তথা চলচ্চিত্রশিল্পকে, এখন শুধু তাঁর দেবার পালা। এই প্রত্যয় নিয়েই তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আবির্ভূত হয়েছেন।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের ও দেশবাসীরমধ্যে অনেকেরেই ধারণা এবং মনে আশার সঞ্চার হয়েছে যে, চলচ্চিত্রের এই দুঃসময়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের মত একজন নীতিবান মানুষের এফডিসিতে ফিরে আসায়, চলচ্চিত্রের উন্নয়ন এবং শিল্পীদের হারানো সম্মান ফিরে পাবার সমূহসম্ভাবনা রয়েছে । বিশেষ করে, দুস্থ ও অসহায় শিল্পীর পরিচয় মুছে দিয়ে, চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালক সমিতিসহ অন্যান্য সমিতির সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে, চলচ্চিত্রশিল্পের স্বার্থে দল ও মতের উর্ধে গিয়ে, ভালো ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের পথ প্রসারিত করার, যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিই হলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি হলে, চলচ্চিত্রশিল্পকে অনেক কিছুই দিতে পারবেন বলে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস। যেহেতু আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে।
যেহেতু আমাদের চলচ্চিত্র- ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, দেশের স্বাধীনতা, শিল্প-সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বহন করে, তাই চলচ্চিত্রশিল্পকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়ীত্ব। এই কঠিনতম দায়ীত্ব সুচারুভাবে পালন করার জন্য, যে মাপের ও গুণের চলচ্চিত্র ব্যাক্তিত্বের প্রয়োজন, তার সব ধরণের গুণাবলীই আছে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এর মধ্যে।
এদেশে ইলিয়াস কাঞ্চন একটি নাম, একটি আন্দোলন, একটি প্রতিষ্ঠান, একটি ইতিহাস, তরুন প্রজন্মের ‘আইকন’।
ব্যক্তিজীবনে অত্যান্ত সৎ, ন্যায়পরায়ণ, ধার্মিক ও এক মহৎপ্রাণ সাদা মনের মানুষ । একজন নীতিবান পরিছন্ন ভালো মানুষ হিসেবে, পুরো দেশের মানুষের কাছে অতি সম্মানীয়। সিনেমাপর্দায় ভিলেনের লড়াইয়ে, তাঁর পক্ষে থাকতেন হল ভর্তি দর্শকরা। আর আজ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে, পুরো দেশের মানুষ তাঁর পক্ষে।
যারা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভোটার আছেন, তাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ থাকবে, ভাবুন এটা সারা দেশের সমস্ত শিল্পীদের নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে, দেশের সংখ্যাঘরিষ্ঠ মানুষের চাওয়া- একটাই, ইলিয়াস কাঞ্চন এর প্যানেলের জয়ী হওয়া। কিন্তু- দেশের সকল মানুষ সমর্থন দিলেই ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল জয়ী হবে না।
কেবল মাত্র আপনারা যারা শিল্পীসমিতির ভোটার, আপনাদের মূল্যবান ভোট-ই কেবল দেশের সংখ্যাঘরিষ্ঠ মানুষের চাওয়ার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
তাই সকল ভোটারদের প্রতি সর্বোচ্চ অনুরোধ থাকবে, দেশের মানুষের সমর্থনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে, ইলিয়াস কাঞ্চন এর প্যানেলকে ভোট দিবেন।
বাংলাদেশের সকল শিল্পীদের প্রতি শুভকমনা রইলো। শুভকমনা রইলো- নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এর প্যানেলের প্রতি।
এ কে আজাদ
চলচ্চিত্রসংসদকর্মী, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী