এ কে আজাদ: বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক-প্রযোজক মতিউর রহমান পানু’র তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২০ সালের ২৪ মার্চ, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। প্রয়াত এই গুণি চলচ্চিত্র পরিচালক-এর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মতিউর রহমান পানু ১৯৪০ সালের ৩১ ডিসেম্বর, বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বগুড়া সেন্ট্রাল হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এক সময় বগুড়া থেকে ঢাকা চলে আসেন।
চিত্রপরিচালক বাবুল চৌধুরীর সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন মতিউর রহমান পানু। সহকারী পরিচালক হিসেবে আরো কাজ করেছেন- দারাশিকো, সৈয়দ আউয়াল ও আকবর কবির পিন্টুর সাথে।
তাঁর পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘হারানো মানিক’ মুক্তিপায় ১৯৭৮ সালে। এরপর তিনি আরো পরিচালনা করেন- আপন ভাই, নির্দোষ, সাথী, ইনসাফ, নাগ মহল, নির্যাতন, মান-মর্যাদা, সাহস, বেদের মেয়ে জোসনা (ভারত), মনের মাঝে তুমি (যৌথ প্রযোজনায়) ছবিগুলো।
চলচ্চিত্র পরিচালনার পাশাপাশি মতিউর রহমান পানু, প্রযোজনা ও পরিবেশনাও করেন। অভিনতা আব্বাস উল্লাহ’র সাথে মিলে, দুজনে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আনন্দমেলা চলচ্চিত্র লিঃ’ নামে প্রযোজনা-পরিবেশনা সংস্থা। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি প্রযোজনা করেন- নির্যাতন, বেদের মেয়ে জোসনা, গাড়িয়াল ভাই, রঙ্গিলা, নসিমন, মনের মাঝে তুমি (যৌথ-ভারত), মোল্লা বাড়ির বউ, জ্বী হুজুর, টাইগার নাম্বার ওয়ান, প্রভৃতি চলচ্চিত্র ।
চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনা দু’টাতেই সফল ছিলেন মতিউর রহমান পানু। তাঁর পরিচালিত প্রায় সব ছবিই ব্যববসাসফল ও ভালো মানের। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে বাণিজ্যিকভাবে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ‘বেদের মেয়ে জোসনা’। এই ছবিটি প্রযোজনা করে তিনি (আব্বাস উল্লাহ’সহ)
বহুল পরিচিতি ও খ্যাতি অর্জন করেন ।
ব্যক্তিজীবনে মতিউর রহমান পানু ১৯৭২ সালে, আলেয়া বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সন্তান মশিউর রহমান পল্লব (লাভ স্টোরি ছবির নায়ক) ও
মাহফুজুর রহমান পুনাম।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রজগতে একজন সাদা-সিধে ভালো মানুষ হিসেবে সুপরিচিতি ও সুখ্যাতি ছিল তাঁর। চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রয়োজক হিসেবেও ছিলেন জনপ্রিয়। মতিউর রহমান পানু তাঁর চলচ্চিত্রকর্মগুণে চির অম্লান হয়ে থাকবেন।