আজাদ আবুল কাশেম: বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক ই. আর. খান এর দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১২ সালের ২১ জুন, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। প্রয়াত এই চিত্রপরিচালকের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
ই. আর. খান (ইরতিফা-উর-রহমান খান) ১৯৩৫ সালের ২১ জুন, পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাকিম হাবীবুর রহমান খান। লালবাগের চকবাজারস্থ একটি রাস্তার নাম তাঁর বাবা ‘হাকিম হাবিবুর রহমান খান রোড’ নামে, নামকরণ করা হয়েছে। তিনি লেখাপড়া করেছেন সেন্ট গ্রেগরি স্কুল, মুসলিম হাই স্কুল ও এম এ জিন্নাহ কলেজে।
খ্যাতিমান চলচ্চিত্রগ্রাহক প্রয়াত মাহফুজুর রহমান খান তাঁর ভাতিজা। প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক ভাতৃদ্বয় এহতেশাম ও মুস্তাফিজ-এর মামা ছিলেন ই. আর. খান। এই জন্য চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কাছে তিনি ‘মামা’ হিসেবে ছিলেন অধিক পরিচিত।
তিনি প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক এহতেশাম ও মুস্তাফিজের ‘লিও ফিল্মস’-এ যোগ দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে আসেন। এহতেশাম পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘এদেশ তোমার আমার’-এ ব্যবস্থাপক ও সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ করেন । পরবর্তিতে অনেকর সাথেই প্রধান সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছেন। ই. আর. খান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চেনা অচেনা’ মুক্তিপায় ১৯৬৮ সালে। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো- ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘সন্তান’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘দাসী’, ‘মামা ভাগ্নে’, ‘বধূ’, ‘সময় কথা বলে’, ‘কোবরা’, ‘ব্যবধান’, ‘তামাশা’ প্রভৃতি।
তাঁর প্রযোজিত প্রথম ছবি ছিল ‘সন্তান’ । তিনি কিছু ছবির চিত্রনাট্যও লিখেছেন।
ই. আর. খান, চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে পেয়েছেন ‘ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার-২০১১’। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন কর্তৃক পেয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননা।
তিনি নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঢাকা ক্লাব, ধানমন্ডি লায়ন্স ক্লাব, লায়ন্স ফাউন্ডেশন, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ঢাকা সমিতি, ফিল্ম আর্কাইভ, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রদর্শন সমিতি ইত্যাদি বিভিন্ন সংগঠনের তিনি আজীবন সদস্য, সদস্য বা দাতা সদস্য ছিলেন।
ই. আর. খান, হাকীম হাবিবুর রহমান ইউনানী মেডিকেল কলেজ (তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজ, ঢাকা), ইউনানী মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং শেফাউল মুল্ক হাকীম হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন।
একজন পরিছন্ন ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে ই. আর. খান-এর অবদান অনস্বীকার্য।