English

25 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কুমকুম-এর দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

আজাদ আবুল কাশেম: বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কুমকুম-এর দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। প্রয়াত এই গুণি চলচ্চিত্রকারের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

বাণিজ্যসফল ছবি’র গুণি নির্মাতা আলমগীর কুমকুম ১৯৪২ সালের ২২ জানুয়ারি, মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার, সমষপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৬’র ছয় দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন।

১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, ই আর খান পরিচালিত ‘চেনা অচেনা’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে আসেন আলমগীর কুমকুম। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালে। তিনি একাধারে চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, পরিবেশক ও প্রদর্শক ছিলেন।
আলমগীর কুমকুম নির্মিত অন্যান্য ছবিসমূহের মধ্যে- স্মৃতিটুকু থাক, আমার জন্মভূমি, গুণ্ডা, মমতা, আগুনের আলো, কাপুরুষ, সোনার চেয়ে দামী, রাজবন্দী,
রাজার রাজা, ঝুমকা, ভালোবাসা, শমসের,
কাবিন, রকি, মহান, সোনার নাও পবনের বৈঠা, অমর সঙ্গী, মায়ের দোয়া, অপরাজিত নায়ক, অতিক্রম, জীবন চাবি, অন্যতম।

স্বাধীনতার আগে এদেশে যেসব ছাত্রনেতা আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে রাজপথ কাঁপিয়েছেন, প্রতিবাদী হয়েছেন বলিষ্ঠ কন্ঠে, আলমগীর কুমকুম ছিলেন তাদেরই অন্যতম একজন।
চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি তিনি পাকিস্তান আমল থেকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
আলমগীর কুমকুম বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

৭৫’এর পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবিতে এদেশের বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গণের, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটে’র নেতৃত্বে, ঐক্যবদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে গেছেন আলমগীর কুমকুম। সুস্থ-সুন্দর রাজনীতির চর্চা করে গেছেন আজীবন। দক্ষ সংগঠক হিসেবে তিনি সমাদৃত ছিলেন রাজনীতি ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে।

ত্যাগী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আলমগীর কুমকুম, তাঁর দল বা সরকার থেকে কোন রাস্ট্রীয় সম্মানই পাননি।
এমনকী অনেক জনপ্রিয় ভালো ছবি নির্মাণ করেও, চলচ্চিত্রকার হিসেবেও কোন রাস্ট্রীয় সম্মাননা পায়নি, এই কৃতিমান চলচ্চিত্রকার। আলমগীর কুমকুম দলের কাছে/সরকারের কাছে কিছুই চাননি। তিনি নীরবে-নিভৃতে কাজ করে গেছেন, আপন ভূবনে। আর এই কর্মই তাঁকে সম্মানীয় করে রাখবে।

বাংলাদেশের রাজনীতি ও চলচ্চিত্রের ইতিহাসে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিবেদিতপ্রাণ একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কুমকুম, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আমাদের মাঝে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন