আজাদ আবুল কাশেম: বিশিষ্ট অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। প্রয়াত এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মাহমুদ সাজ্জাদ ১৯৪৭ সালের ৩ মে, ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম এম আবদুল ওয়াদুদ ও মাতা রাবেয়া খাতুন। তিনি পড়ালেখা করেছেন আনন্দ মোহন কলেজে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পাঁচ ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।
দ্বিতীয় ভাই বিটিভির সাবেক মহা-পরিচালক ম হামিদ, ছোট ভাই কে. এম খালিদ বাবু সংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী।
মাহমুদ সাজ্জাদ শৈশব থেকেই সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কলেজজীবন থেকে মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে নাট্যদল ‘নাট্যচক্র’র সঙ্গে জড়িত হন। এই দলের হয়ে অভিনয় করেছেন ‘লেট দেয়ার বি লাইট’, ‘স্পার্টাকাস’ ও ‘জনক’ প্রভৃতি নাটকে।
পাশাপাশি অভিনয় করেছেন অসংখ্য টিভি নাটকে। তাঁর অভিনীত অসংখ্য টিভি নাটকের মধ্যে- সকাল সন্ধ্যা, চয়ন তোমার জন্য, হীরামন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, দুপুরে হাসনা হেনা, ঐতো জোয়ার এলো, দুই শালিকে সুখ, উল্লেখযোগ্য।
মিষ্টি হাসি আর সুন্দর চেহারার অধিকারী মাহমুদ সাজ্জাদ কলেজে পড়াকালীন সময়েই চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের কাহিনী ও চিত্রনাট্যে, সিনে ওয়ার্কশপ গোষ্ঠী পরিচালিত তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘সংসার’ মুক্তিপায় ১৯৬৮ সালে। এই ছবিতে নবাগতা চিত্রনায়িকা ‘সুবর্ণা’র বিপরীতে নায়ক ছিলেন মাহমুদ সাজ্জাদ।
পরবর্তীতে ‘সুবর্ণা’ হয়ে উঠেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী ‘ববিতা’। মাহমুদ সাজ্জাদ এরপরে আরো অভিনয় করেন- ফয়েজ চৌধুরী পরিচালিত ‘মুক্তি’, বশীর হোসেনের ‘আপন পর’, সিবি জামানের ‘ঝড়ের পাখি’, আজিজ আজহারের ‘চোখের জলে’, নুরু-উল আলমের ‘চলো ঘর বাঁধি’, মিতা’র ‘সুখের সংসার’ ও ‘সাহেব’ প্রভৃতি ছবিতে।
সর্বশেষ তিনি মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে অভিনয় করেছেন।
মাহমুদ সাজ্জাদের স্ত্রী মমতাজ বেগম। উপল ও অঞ্জন নামে তাদের দুই সন্তান রয়েছে।
সাজ্জাদ মাহমুদ ছিলেন মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের সুদক্ষ অভিনেতা। বিভিন্ন চরিত্রে বৈচিত্র্যময় অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন অনায়াসে। সব মাধ্যমেই সুঅভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছেন এই সুদর্শন অভিনেতা। শিল্প-সংস্কৃতির মানুষদের কাছে একজন সজ্জন, মিতভাষী, ভালো মানুষ ও উজ্জ্বল সংস্কৃতিজন হিসেবে তাঁর সুপরিচিতি ছিল সর্বজন স্বীকৃত।