নাসিম রুমি: খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার শ্যামল মিত্র। নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত ও আধুনিক গানের পাশাপাশি বহু চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্যে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। সুললিত কণ্ঠ মাধুর্য আর চমৎকার সুরযোজনায় বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বাংলা সঙ্গীত জগতে এই শিল্পী অসাধারণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। আজ তার ৩৭তম প্রয়াণ দিবস।
শিল্পী শ্যামল মিত্রের জন্ম ১৯২৯ সালের ১৪ জানুয়ারি নৈহাটিতে। সঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন সুধীরলাল চক্রবর্তীর কাছে। বাইশ বছর বয়সে আধুনিক গান নিয়ে শ্যামল মিত্রের গাওয়া প্রথম রেকর্ড বেরোয় কলকাতার এইচ.এম.ভি থেকে। গানগুলোর সুরকার ছিলেন সুধীরলাল চক্রবর্তী। এরপর কেবলই সামনে এগিয়ে চলা। নিজের সুর করা গান নিয়ে একের পর এক বেরোতে থাকে আধুনিক গানের রেকর্ড। কণ্ঠশিল্পীর পাশাপাশি সুরকার হিসেবেও জনপ্রিয় এবং প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠেন শ্যামল মিত্র।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, সতীনাথ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ প্রথিতযশা শিল্পী শ্যামল মিত্রের সুরে গান গেয়েছেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতে শিল্পী প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের কাছে। রবীন্দ্র সঙ্গীতে শ্যামলের একাধিক রেকর্ড রয়েছে। গেয়েছেন নজরুলের গান। আধুনিক গানে ও চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে সুধীন দাশগুপ্ত, সলীল চৌধুরী, নচিকেতা ঘোষ, রবীন চট্টোপাধ্যায়, অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের সুরে গান গেয়েছেন শ্যামল মিত্র।
তার গাওয়া অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’, ‘তুমি আর আমি শুধু জীবনের খেলাঘর’, ‘যা যারে যা যা পাখি’, ‘হংস পাখা দিয়ে’ প্রভৃতি। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘হয়তো কিছুই নাহি পাব’, ‘ও ঝরা পাতা’; সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘রাতের আকাশ তারায় রয়েছে’ প্রভৃতি জনপ্রিয় গানের সুর করেছেন শ্যামল মিত্র। বর্তমান যুগেও হারানো দিনের সেসব গানের আবেদন অমলিন। ১৯৮৭ সালের ১৫ নভেম্বর শিল্পী শ্যামল মিত্র প্রয়াত হন।