প্রতিভাবান অভিনেতা চ্যালেঞ্জার-এর ১১ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫১ বছর। অকাল প্রয়াত এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
চ্যালেঞ্জার (এ এস এম তোফাজ্জল হোসেন) ১৯৫৯ সালের ১০ আগস্ট, ঢাকার খিলগাঁওয়ের হাজীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। অভিনেত্রী মনিরা মিঠু তাঁর ছোট বোন। তিনি খিলগাঁও মডেল স্কুল থেকে এসএসসি এবং নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৭৮ সালে জীবিকার সন্ধানে চলে যান সৌদি আরবে। আট বছর সেখানে থাকার পর ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দেশে এসে প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করেন । এই প্রিন্টিং ব্যবসার সূত্রেই পরিচয় হয় জনপ্রিয় সাহিত্যিক, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ-এর সাথে। আর হুমায়ূন আহমেদ-ই তাঁকে অভিনেতা বানিয়ে দেন।
মধ্যবয়সে হঠাৎ-ই অভিনয় জগতে আসেন চ্যালেঞ্জার। ২০০০ সালে, হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘হাবলঙ্গের বাজার’ টেলিভিশন নাটকে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য অন্যান্য নাটকগুলোর মধ্যে- অনাথ বাবুর ভয়, বৃক্ষমানব, ভবের হাট, শওকত সাহেবের গাড়ি কেনা, যমুনার জল দেখতে কাল, চন্দ্র কারিগর, গণি সাহেবের শেষ কিছু দিন, কালা কইতর, লীলাবতী, জুতা বাবা, আজ জরির বিয়ে, খোয়াব নগর, চোর, রূপালি রাত্রি, পিশাচ মকবুল, জলতরঙ্গ, এই বর্ষায়, জিন্দা কবর, তাঁরা তিনজন, ২৪ ক্যারট ম্যান, উড়ে যায় বকপক্ষী, খেলা, বউ, এইম ইন লাইফ, প্রভৃতি।
প্রতিভাবান অভিনেতা চ্যালেঞ্জার কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। দুই দুয়ারী, শ্যামল ছায়া, লাল সবুজ, কাল সকালে, নয় নম্বর বিপদ সংকেত, দারুচিনি দ্বীপ, তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
প্রতিভাবান ও মেধাবী একজন অভিনেতা ছিলেন চ্যালেঞ্জার। মধ্যবয়সে অভিনয়ের সাথে যুক্ত হয়ে, তিনি তাঁর অভিনয় দক্ষতার গুণে খুবই জনপ্রিয় হয়ে ছিলেন। অল্প সময়ের অভিনয়জীবনে নানা ধরণের চরিত্রে সাবলীল-সুন্দর অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে একটি স্থায়ী আসন করে নিয়ে ছিলেন। কমেডি বা সিরিয়াস যে কোনো চরিত্রে তাঁর অভিনয় দক্ষতা ছিল দেখার মতো। যে কোনো চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার আশ্চার্য্য রকমের ক্ষমতা ছিল তাঁর। একজন উচুমানের অভিনয়শিল্পী হিসেবে তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন নাটকে ও চলচ্চিত্রে।