দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার পুনিত রাজকুমারের মৃত্যুর ১৩ কেটে গেছে। এখনো তাকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিদিন ৩০ হাজার মানুষ ভিড় করছেন তার সমাধিতে। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, শিবকুমার নামে এক ব্যবসায়ী তার বড় ছেলের নাম রেখেছেন পুনীতের নামে। দুই ছেলেকে নিয়ে কান্তিরাভায় অবস্থিত পুনিতের সমাধিতে হাজির হন শ্রদ্ধা জানাতে। ছোট ছেলেকে কাঁধে নিয়ে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করেন শিবকুমার। তার ভাষায়—‘কেবল তার অভিনয়ের জন্য নয়, সমাজের প্রতি তার কর্তব্যবোধের জন্য আমরা তার প্রতি মুগ্ধ।’
ভিড় সামলানোর জন্য ৩০০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে পুনিতের সমাধিতে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর আউটার রিং রোডের এই সমাধিস্থলে ভক্তদের সমাগমের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
অসাধারণ এই অভিনেতা, গায়ক ব্যক্তিগত জীবনে খুবই উদার মনের মানুষ ছিলেন। সামজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। বাবা কন্নড় সিনেমার ‘ম্যাটিনি আইডল’ রাজকুমারের শুরু করা নানা জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ তিনি তত্ত্বাবধান করতেন।
জানা গেছে, কর্ণাটকের বিভিন্ন স্থানে ৪৫টি স্কুলে বিনা বেতনে শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করতেন পুনিত। প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর ভার ছিল এই অভিনেতার কাঁধে। এ ছাড়া তার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো ২৬টি অনাথাশ্রম, ১৯টি গরুর খামার এবং ১৬টি বৃদ্ধাশ্রম। পুনিতের অনুপস্থিতিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শোকের মাতম চলেছে। অনেকেই কাঁদছেন তাদের প্রিয় এই মানুষের জন্য। তাদের কাছে পুনিত অভিনেতা ছিলেন না, ছিলেন দেবতার মতো।
পারিশ্রমিকের বেশিরভাগ অর্থই তিনি বিভিন্ন দাতব্য কাজে দান করতেন। বিশেষ করে সিনেমায় গান গেয়ে যে অর্থ তিনি পেতেন, পুরোটাই বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে দান করতেন। এখানেই শেষ নয়, মরণোত্তর চক্ষুদান করে গেছেন এই অভিনেতা।
শিশুশিল্পী হিসেবে মাত্র পাঁচ বছর বয়সে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন পুনিত। ‘বেট্টাডা হুভু’ সিনেমাটিতে অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান। ২০০২ সালে ‘আপ্পু’ সিনেমায় নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় করেন। তারপর অনেক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দেন তিনি। কন্নড় সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন পুনিত। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো—‘অভি’, ‘ভীরা কানাড়িগা’, ‘আকাশ’, ‘অজয়’, ‘অঞ্জনি পুত্রা’ প্রমুখ।