আলোচনার ও সমালোচনার ঝড়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। চর্চার নিরিখে ২০২২-২৪ মেয়াদের এই নির্বাচন অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এর আগে শিল্পী সমিতির কোনো নির্বাচন ঘিরে এতো আলোচনা হয়নি। তাই এবারের জয়-পরাজয় কতখানি গুরুত্ব বহন করছে, তা সহজেই অনুমেয়।
এই নির্বাচনে সভাপতি পদের জন্য লড়ছেন দু’জন বরেণ্য তারকা। একজন দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল সিনেমার নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন; আরেকজন সবচেয়ে সফল খলনায়ক মিশা সওদাগর। তাই লড়াইটা এবার নায়ক-ভিলেনেরই বটে!
সিনেমার পর্দায় নায়ক ও ভিলেনের মধ্যে লড়াই হয়। শেষ পর্যায়ে জিতে যায় নায়ক। কিন্তু বাস্তবের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে কাঞ্চন ও মিশা দু’জনেই স্বাভাবিক মানুষ। তারা চলচ্চিত্রের শিল্পীদের আপনজন। তাই দিনশেষে কাকে আগামী দুই বছরের জন্য নেতা হিসেবে তারা বেছে নেন, সেটা অনুমান করা কঠিন।
নির্বাচনী ব্যস্ততার ফাঁকেও নামাজের কথা ভোলেননি ইলিয়াস কাঞ্চন ও মিশা সওদাগর। দুই সভাপতি পদপ্রার্থী একসঙ্গে গিয়ে এফডিসির নতুন মসজিদে নামাজ পড়েছেন। তার আগ মুহূর্তে তারা বন্দী হয়েছেন ক্যামেরায়।
ভোট চলাকালীন কখনো গান গেয়ে, কখনো হাস্যোজ্বল বাক্যালাপে ভোট চেয়েছেন কাঞ্চন ও মিশা। দু’জনের মধ্যেই দেখা গেছে অফুরান আত্মবিশ্বাস।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, ‘ভোটের সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা দ্বিমুখী হলেও আমরা এক। আমাদের দেখে দেশবাসীর শেখা উচিত। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কেমন করে করতে হয় আমরা দেখালাম। ভোট কিভাবে করতে হয়, প্রার্থীদের আচারণ কেমন হবে তা আমাদের দুই সভাপতি প্রার্থীর আচারণ বলে দিচ্ছে। একজন আরেকজনকে ধাওয়া করে, গুলি করে কিন্তু আমরা শিল্পীরা আমাদের মধ্যে এসব নেই। সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে এটাই শিল্পীদের পরিচয় দেয়।’
জয়-পরাজয়ের ব্যাপারে আগে থেকেই কিছু ভাবতে চান না ইলিয়াস কাঞ্চন। তার ভাষ্য, ‘আমি ফলাফলে বিশ্বাসী।’
অন্যদিকে মিশা সওদাগর জানালেন, তিনি জয়ের ব্যাপারে ৬০ ভাগ আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘কাঞ্চন ভাইয়ের সাথে নির্বাচন করতে পেরে আমি সম্মানিত। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ ভালো অভিনেতা।’
উল্লেখ্য, মিশা সওদাগর গত দুই মেয়াদে শিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। আর ইলিয়াস কাঞ্চন এর আগে বিভিন্ন পদে নির্বাচন করলেও এই প্রথম সভাপতি প্রার্থী হলেন। এখন দেখার অপেক্ষা, কার মুখে ফোটে শেষ হাসি।