থাকে না কিছু মানুষ এমন? যাদের অনেক লোকজন নিয়ে আড্ডা। মোজ-মাস্তিতে মেতে থাকে সারাক্ষণ। কিছু করতে গেলে, খেতে গেলে মানুষ ছাড়া তাদের জমে না। আমিও কিন্তু তেমন। আমি একা থাকতে পারি না। একমাত্র বই পড়া, মুভি দেখা কিংবা রান্না করার সময় আমার একাকীত্ব ভালো লাগে। তাছাড়া বাকী সময়টা আমার মানুষ প্রয়োজন পড়ে। তবে আমার আশে পাশের মানুষগুলো ঘুরে ফিরে অল্প কয়েকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সেই কয়েকজনই আমার প্রতিটা সময়ের ভাগিদার।
আমি বিশ্বাস করি মানুষ বদলায়। এদের ভিতর কাউকে বদলাতে দেখলে আমিও বদলে যাই। হয়তো অনেকেই আমাকে স্বার্থপর ভাববে, কিন্তু যার দ্বারা ক্ষতি সাধিত হবে তার থেকে দূরে যাওয়া, স্বার্থপরতা বিশেষণ গায়ে লাগানোর চেয়ে ঢের ভালো।
আবার গণহারে সবার সাথে মেশা, কথা বলা, আড্ডাবাজি করা আমার কর্ম নয়। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি ভুল মানুষগুলো আপনাকে কোনো ভালো পরামর্শ দিবে না, তারা খারাপটাকেই এমনভাবে উপস্থাপন করবে যেনো সেটা ছাড়া বাকি সব ভুল। আপনি তখনি ভালো মনে করে সেই ভুল করে বসবেন। তাই আমার সঙ্গী নির্বাচনে অনেকটা সময় লেগে যায়। আর এজন্য আমার বন্ধু হতেও বেশ সময় লাগে কারো। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হতে হতে ৪টি সেমিষ্টার শেষ হয়ে গিয়েছিলো।
আবার এই আমি খুব মিশুক। প্রথম দেখাতেই যে কারো সাথে খুব সহজে মিশে যাই। হয়তো সামনের মানুষটা বুঝতেও পারে না তার সাথে আমার একটা সুক্ষ্ম লাইন আমি তৈরি করে রাখি সেই মেশার ভেতরই। তবে গণহারে সবার সাথে মিশলে কি হয় জানেন? আপনার ব্যক্তিত্ব আপনার কথায় চলবে না তখন। কথায় আছে, ‘‘নামা মুনি, নানা মত”। তাই অনেক বেশি মানুষের সাথে চললে আপনি আপনার নিজেকে অন্যের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন। তবে এটা সত্য নিজের আশেপাশের আড্ডাবাজির সঙ্গী নির্বাচনে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। অল্প কয়েকজনের সাথে মিশুন যারা সুপরামর্শ দিবে, আপনাকে আলোর পথ দেখাবে।
মনে রাখবেন, নিজের চেয়ে ভালো লোকের সঙ্গে চলা উত্তম। এমন লোক বাছাই করা প্রয়োজন যাদের আচরণ, স্বশিক্ষা, চলাফেরা আপনার চেয়ে ভালো এবং আদর্শপূর্ণ। তাহলে আপনিও সেইদিকে চালিত হবেন।
আর এসব মাথায় রাখি বলেই আমার সার্কেল ছোট। গুটিকয়েক মানুষ নিয়ে আমার চলাচল। যারা আমার ঝামেলা মিটায় না, তবে বাড়ায়ও না। জীবনকে সুন্দর করতে শুধু অল্প একটু পরিকল্পনা দরকার। নিজের আশেপাশে আবর্জনাময় লোকজন পরিহার করুন, জীবন আপনাআপনি সুগন্ধময় হয়ে উঠবে।
লেখক: নবীন অভিনয়শিল্পী
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)