গত কয়েক বছরে দেশে আশংকাজনক হারে জ্ঞানীর সংখ্যা বেড়েছে! যে কোন ইস্যুতে ঘরে বাইরে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, সকল ক্ষেত্রে জ্ঞানী গিজ গিজ করে… সবাই সব বোঝে…যে কোন বিষয়ে হুট হাট জ্ঞান দিয়ে বসাটা একটা দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।
কোথায় জ্ঞান দিচ্ছে, কাকে জ্ঞান দিচ্ছে, কি বিষয়ে জ্ঞান দিচ্ছে… এই বিবেচনা শক্তি টুকুও অধিকাংশেরই নেই। কিন্তু সর্বক্ষণ, সর্বত্র জ্ঞান দানে সকলেই সিদ্ধ হস্ত। সকল বিষয়ে অভিজ্ঞ। এত সংখ্যক জ্ঞানীর উৎপত্তির কারণটা জানতে আমার খুব ইচ্ছে হয়।
“ আপনি এটা করলেন কেন? আপনার তো ওটা করা উচিত হয়নি, আপনার কাছ থেকে এটা আশা করি না, আপনার এটা করা উচিত, আপনি অমুক ইস্যু নিয়ে স্ট্যাটাস দিলেন না কেন, আপনার কিন্তু এই ইস্যু নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়াটা উচিত হয়নি” বাপরে বাপ… সবাই উচিত অনুচিত শিক্ষা আর জ্ঞান দেবার পাইকারি দোকান খুলে বসে আছে! “এখানে ২৪ ঘণ্টা বিনা মূল্যে বাধ্যতামূলকভাবে জ্ঞান বিতরণ করা হয়।’’
যারা নিজেকে সবজান্তা শমসের মনে করেন, তাদের উদ্দেশে বলছি… অন্য কাউকে জ্ঞান দেবার আগে, ঐ বিষয়ে নিজের কতটুকু জ্ঞান বা যোগ্যতা আছে, সেটা যাচাই করে নিন। নিজের চরকায় তেল দিন… বিনা মূল্যে জ্ঞান বিতরণের পাইকারী দোকানের ঝাপটা বন্ধ করেন।
আমার কথাগুলোর সত্যতা মেলাতে পারেন ফেসবুকে প্রবেশ করলেই… ধর্ম নিয়ে জ্ঞান, শিল্প সাহিত্য নিয়ে জ্ঞান, রাজনীতি নিয়ে জ্ঞান… সকল বিষয়ে শুধু জ্ঞান আর জ্ঞান… মোট কথা সর্ব বিষয়ে পারদর্শী জ্ঞানীরা ভাইরাসের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ছেয়ে ফেলেছে। আপনি যদি প্রকৃত অর্থেই নিজেকে জ্ঞানী মনে করেন, সেই জ্ঞান, নিজের উপরই প্রয়োগ করে সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন। অন্যের জ্ঞানের প্রতিও যৎ সামান্য আস্থা রাখুন… সব কিছুর আগে নিজের যোগ্যতাটা বিচার করতে শিখুন।
বি:দ্র: প্রকৃতই যাঁরা সত্য, সুন্দর এবং জ্ঞানকে হৃদয়ে ধারণ করেন, উপরের কথাগুলো তাঁদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এই স্ট্যাটাস দেখার পর, অনেকেই উল্টো আমাকে জ্ঞানী বলে কটাক্ষ করবেন সেটা যেমন আমি জানি, আবার এটা বলেও জ্ঞান দেয়া শুরু করবেন যে, “চঞ্চল ভাই, উপরের লেখার সাথে আপনার নিচের ছবিটা যায় না!”
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)