তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে শঙ্কায় দেশটির চলচ্চিত্রাঙ্গনের মানুষ। এই অবস্থায় বিশ্ব চলচ্চিত্রাঙ্গনের কাছে আফগানিস্তানের চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাধারণ নারীদের তালেবানদের হাত থেকে রক্ষা করার অনুরোধ করেছেন সাহরা কারিমি।
তিনিই একমাত্র আফগান নারী যার সিনেমা বিষয়ে পিএইচডি রয়েছে। তার সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘হাভা, মরিয়ম, আয়েশা’। ২০১৯ সালে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে খোলা চিঠিতে সারাহ কারিমি লিখেছেন, ‘তালেবানরা শহরে পৌঁছে গেছে। আমরা শহর ছেড়ে পালাচ্ছি। তালবানরা নারীর অধিকার খর্ব করবে, আমাদের চার দেয়ালে বন্দি করা হবে এবং বাকস্বাধীনতা থাকবে না। তালেবানরা যখন শাসন করতো, একজন মেয়েও স্কুলে যেতো না। এরপর থেকে ৯ মিলিয়ন মেয়ে স্কুলে গেছে। এই কয়েক সপ্তাহেই তালেবানরা অনেক স্কুলে ভেঙে দিয়েছে। ইতোমধ্যে ২ মিলিয়ন মেয়ে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি আরো লেখেন, ‘একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আমার দেশের জন্য যত কঠোর পরিশ্রম করে কাজ করেছি সবকিছু ঝুঁকিতে। তালেবানরা ক্ষমতায় গেলে সব ধরনের শিল্প নিষিদ্ধ করবে। আর আমি ও অন্য চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের পরবর্তী হিট লিস্টে থাকবো।’
সাহরা কারিমি জানান, মিডিয়া, সরকার এবং বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলো চুপ হয়ে আছে, যেন মনে হচ্ছে তালেবানদের সঙ্গে ‘শান্তি চুক্তি’ হচ্ছে। তালেবানরা আবারো ক্ষমতায় গেলে বর্বরতা আরো বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
কারিমির দাবি, তালেবানদের লক্ষ্য নারী ও সংস্কৃতিমনাদের দমিয়ে রাখা। তার ভাষায়, ‘গত কয়েক সপ্তাহে তালেবানরা আমাদের জনগণের ওপর নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, অনেক শিশুকে অপহরণ করেছে, তাদের সঙ্গীদের কাছে মেয়েদের শিশু স্ত্রী হিসেবে বিক্রি করেছে, পোশাকের জন্য নারীদের হত্যা করেছে, নারীদের চোখ উপড়ে দিয়েছে, আমাদের প্রিয় একজন কমেডিয়ানকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে, আমাদের একজন প্রিয় কবিকে হত্যা করেছে, সরকারের (বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত) সংস্কৃতি ও মিডিয়া প্রধানকে হত্যা করেছে।’