পশ্চিমবঙ্গের নামজাদা চিকিৎসক বিধান চন্দ্র রায়কে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করতে চলেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। সম্প্রতি এ বিষয়ে শিল্পী আগ্রহ দেখিয়ে যোগাযোগ করেছেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (এন আর এস) অ্যানাটমি বিভাগের সঙ্গে।
ভারতে এসে তথ্যচিত্রের শুটিং করার জন্য দুই দেশের দূতাবাসসহ আরও কিছু জায়গা থেকে অনুমতি নেওয়া দরকার। সেই কাজও দ্রুত গতিতে চলছে বলে জানা গেছে। ফলে, এন আর এস কর্তৃপক্ষ এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে বিধান রায়ের স্মৃতিকে তথ্যচিত্রে বন্দী করার।
যে চিকিৎসক ভারতের গর্ব, তাঁকে বিশ্বের দরবারে ছবির মাধ্যমে তুলে ধরতে চাইছেন বাংলাদেশের গর্ব সাবিনা। এটাও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় বলে মনে করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।
কলকাতার এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তখন নাম ছিল ক্যাম্পবেল হাসপাতাল। সেখানে ১৯১২ থেকে ১৯১৯ পর্যন্ত কাজ করেছিলেন এই কিংবদন্তি চিকিৎসক। এখান থেকে তিনি বর্তমানের আরজি কর হাসপাতালে কাজে যোগ দেন। কিন্তু এন আর এস-এ রয়েছে তাঁর স্মৃতি সমৃদ্ধ চিহ্ন। তিনি যে চেয়ারে বসতেন সেই চেয়ারটি উদ্ধার করে হাসপাতালের মিউজিয়ামে রাখা রয়েছে। সাধারণ মানুষ সেখানে ঢোকার অনুমতি পান বছরে একবার। এছাড়াও এন আর এস তাদের প্রাক্তন সহকর্মী তথা বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে মনে রেখেছে নানাভাবে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও ডাক্তারি পড়ুয়াদের বিনামূল্যে এখানে পড়াতেন।
তাঁর অবদান যেমন চিকিৎসা ক্ষেত্রে ছিল তেমনি ছিল অধ্যাপনায়, দরিদ্র সেবায়। সেই সঙ্গে শব ব্যবচ্ছেদের ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। অ্যানাটমিকাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার রাজ্য সভাপতি এবং এন আর এসের অ্যানাটমি বিভাগের শিক্ষক – চিকিৎসক ডা. অভিজিৎ ভক্ত বলেন, ‘বিধান রায় দেশ বা রাজ্যের পাশাপাশি এন আর এস-এরও গর্ব। তিনি যে শুধু একজন ভালো চিকিৎসক বা শিক্ষকই ছিলেন তা নয়, অ্যানাটমিতেও তাঁর প্রবল দক্ষতা ছিল। শব ব্যবচ্ছেদ ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ পারদর্শিতা ছিল। এই দিকগুলিকে নিয়েই তথ্যচিত্র করার প্রস্তাব দিয়েছেন সাবিনা।’
এই এন আর এস হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগ ছিল ডা. বিধান রায়ের কর্মক্ষেত্র। এই গর্বের জায়গাই বন্দি হতে চলেছে সাবিনার ক্যামেরার ফ্রেমে।