আজ হঠাৎ করে স্কুলের দিনে ফেলে আসা সেই ছেলেগুলোর কথা মনে পড়ছে। যারা চিঠি হাতে দাড়িয়ে থাকত ঘণ্টার পর ঘণ্টা। গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা; আমার একটু দর্শনই ছিলো তাদের কাছে বসন্ত। একই চিঠি পকেটে ভরে ঘুরেছে দিনের পর দিন; দেয়ার সাহসটুকু পেতে পেতে চিঠিগুলোর ললাটে ভাঁজ পরে যেত। কোনো চিঠির ভেতর শুকনো গোলাপের কড়কড়ে পাপড়ি তো কোনোটায় হাত কেটে রক্ত দিয়ে আমার নাম লেখা। চিঠিগুলোর ভাষাগত মর্মার্থ এক হলেও প্রতিটি চিঠির পেছনের আবেগ ছিলো ভিন্ন।
অদ্ভুত কিছু ঘটনা রয়েছে মোবাইল আসার বা সবার হাতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত। এমনও হয়েছে আপন মামা-ভাগ্নের চিঠি আমার কাছে, তো দুই বন্ধুর ঝগড়াও দেখেছি; কে কার পথের কাঁটা এটা নিয়ে। সম্তবত আমরাই শেষ প্রজন্ম যারা এই স্বাদ বা বিস্বাদ নিতে পেরেছে। তবে যদি কখনো এই ছেলেদের কারো সাথে দেখা হওয়ার সুযোগ হয় তবে জানতে চাইব: চিঠির ভেতর যে লেখা থাকতো “আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না” তারা এখনো কিভাবে বেঁচে আছে?
জীবন বড়ই অদ্ভুত, তার চাইতেও অদ্ভুত হলো মানুষের আবেগ বা অনুভূতি। সময়ের সাথে সাথে মানুষ নতুন অনুভূতিকে আপন করে নেয় আর পুরাতন কে করে হাস্যরসের বিষয়বস্তু। এমন বিষয়বস্তু যা একান্তই আপন, যে স্মৃতি কারও সাথে বলা যায় না, যে স্মৃতি মনে করে নিজ মনে বিড়বিড় করে বলে, “হায়রে কতোটা বোকা ছিলাম আমি।”
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)