নাসিম রুমি: জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর ৫০ তম জন্মদিন আজ। চঞ্চল চৌধুরী এমন একজন অভিনেতা, যার অভিনয় দক্ষতায় মুগ্ধ দুই বাংলার অগনিত দর্শক। তিনি কখনো সোনাই হয়ে দর্শকদের বুকে হাহাকার বইয়ে দিয়েছেন, আবার কখনো আয়না কিংবা মিসির আলি হয়ে ছড়িয়েছেন রহস্যের জাল।
ছোট পর্দা থেকে শুরু করে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি মডেল, শিক্ষক ও গায়ক।
১৯৭৪ সালের ১ জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের কামারহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ভার্সেটাইল এ অভিনেতা। তার পিতার নাম রাধা গোবিন্দ চৌধুরী এবং মায়ের নাম নমিতা চৌধুরী।
চঞ্চল কামারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা ও উদয়পুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় ভর্তি হন। ছোটবেলা থেকেই তার গানবাজনা, আবৃত্তি আর নাটকের প্রতি নেশা ছিল।
১৯৯৬ সালে বরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা মামুনুর রশীদের আরণ্যক নাট্যদলে যোগ দেন চঞ্চল। সেখানে ‘কালো দৈত্য’ নাটক দিয়ে তার অভিনয় জীবনের সূচনা হয়। এরপর আরণ্যকের হয়ে ‘সংক্রান্তি’, ‘রাঢ়াঙ’, ‘শত্রুগণ’ ইত্যাদি মঞ্চ নাটকে অভিনয় করে নিজেকে ঝালিয়ে নেন।
বছর চারেক মঞ্চনাটক করার পর ২০০০ সালে টিভি নাটকে ডাক আসে চঞ্চল চৌধুরীর। ফরিদুর রহমান নির্মিত ‘গ্রাস’ চঞ্চল অভিনীত প্রথম টিভি নাটক। তবে তিনি আলোচনায় আসেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘তালপাতার সেপাই’ নাটকে অভিনয় করে। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
তৌকীর আহমেদের পরিচালনায় তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র হচ্ছে ‘রূপকথার গল্প’। তবে চঞ্চল ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা ও সাফল্য পান গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘মনপুরা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। ট্র্যাজেডি ঘরানার সেই চলচ্চিত্র দেশের ইতিহাসে অন্যতম সফল চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃত।
এরপর মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘টেলিভিশন’, কলকাতার গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘মনের মানুষ’, অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘আয়নাবাজি’ ও অনম বিশ্বাসের ‘দেবী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন চঞ্চল চৌধুরী। প্রতিটি চলচ্চিত্রেই তার অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়।
চঞ্চল চৌধুরী ২০১০ সালে ‘মনপুরা’ এবং ২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি তিনবার মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে চঞ্চল চৌধুরী বিবাহিত ও এক সন্তানের বাবা। তার স্ত্রীর নাম সান্ত্বনা সাহা।