নানা নাটকীয়তা শেষে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেছেন।
পরবর্তীতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘এতদিন যে ভুল বোঝাবুঝি ছিলো সেটার অবসান হোক। সবাই মিলে হাতে হাত রেখে চলচ্চিত্রের সেবা করবো। বর্তমানে চলচ্চিত্রের যে অবস্থা, সেখান থেকে দ্রুত উত্তরণ করা প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তার একজন ভ্যানগাড়িওয়ালা, একজন রিকশাওয়ালা, একজন পিয়ন, একজন হোটেল বয়, সর্বস্তরের মানুষ চাচ্ছিলো এই নির্বাচনের যাতে সুষ্ঠু রেজাল্ট হয়। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটি সারা বাংলাদেশের চাওয়া। সবাই দোয়া করেছে। আমরা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে এই রেজাল্ট চূড়ান্ত করার চেষ্টা করেছি। আমাদের যতটুকু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিলো, সেটা আমরা প্রয়োগ করলাম।’
জায়েদ খানের প্রসঙ্গে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজ জায়েদ খান অবশ্যই একটা অন্যায় কাজ করেছে। আজকে শিল্পী সমিতিকে বন্ধ রেখে আপিল বোর্ডকে অপমান করেছে। উনি শিল্পী সমিতি তালা বন্ধ করে রাখতে পারেন না। কারণ তাকে আগেই জানিয়ে রাখা হয়েছে।’
এদিকে জায়েদ খান আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি কোনো অবৈধ কমিটির (আপিল বোর্ড) মিটিংয়ে যাবেন না। তার ভাষ্য, ‘আমি কেন অবৈধ কমিটির কাছে যাব? আর গেলেই বা কী? মিটিংয়ে যে রায় হবে, তাতে আমার কিছুই যায়-আসে না। কারণ, তারা অবৈধ কমিটি। তাদের চ্যালেঞ্জ করতে হলে আদালতে যেতে হবে। ২৯ জানুয়ারি আমাকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তারপরও তারা যদি এটি নিয়ে লড়তে চান, সেটা আদালতে হবে। আপিল বোর্ডের কোনো কার্যকারিতাই নেই। আমার আইন উপদেষ্টা একই কথা বলছেন।’
জায়েদ খান আরও বলেন, ‘আপিল বিভাগ হাস্যকর কর্মকাণ্ড করছে। তারা বলেছে, ২৯ তারিখে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। আমরা সেই চিঠি বের করে দেখেছি, সেটা ১ ফেব্রুয়ারিতে পাঠান। ২৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের কার্যকারিতা শেষ। ১ ফেব্রুয়ারি তারা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাতে পারে না। মন্ত্রণালয়ের কাছেও ওই চিঠি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’
আইনি নোটিশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আপিল বিভাগের কার্যকারিতা সম্পর্কে হয়তো জানে না মন্ত্রণালয়। এ কারণেই এসব ভুল কার্যক্রম বন্ধ করতে মন্ত্রণালয়সহ আপিল বিভাগের পাঁচজনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। এই কার্যক্রম থামানোর অনুরোধ করছি। যদি তা না করে ৫ ফেব্রুয়ারি মিটিং করে, তাহলে এই অবৈধ কার্যক্রমের কারণে সবার নামে মামলা করব।’
এ প্রসঙ্গে সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘সে (জায়েদ খান) কী বলছে না বলছে সেটা ভ্রূক্ষেপ করার মতো অবস্থা আমাদের নেই। আমরা আমাদের সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছি। সকল অভিযোগ আমলে নিয়েই আমরা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করলাম।’
এছাড়া নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যেহেতু তাকে অবাঞ্চিত করা হয়েছে, উনি (পীরজাদা হারুন) তো শপথ পাঠ করাতে পারবেন না। যে দুজন তার সহকারী কমিশনার ছিলেন তারা শপথ পাঠ করাতে পারবেন।’