বরেণ্য অভিনেত্রী ডলি জহুর তার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক প্রাপ্ত সম্মাননা বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মিউজিয়ামে দান করেছেন। বুধবার (১৬ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে এসব পুরস্কার ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালকের কাছে হস্তান্তর করেন ডলি জহুর। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ অভিনেত্রী ডলি জহুরের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি ডকুমেন্টেশন তৈরি করে সংরক্ষণ করবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গবেষণার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
১৯৫৫ সালের ১৭ জুলাই ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ডলি জহুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়াকালীন মঞ্চ নাটকের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭৪-৭৫ সালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি নাটকে অভিনয় করেন তিনি। এরপর নাট্যচক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মঞ্চে প্রথম ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ নাটকে অভিনয় করেন। ডলি জহুর ১৯৭৬ সালের ৫ নভেম্বর জহুরুল ইসলামকে বিয়ে করেন। স্বামী জহুরুল ইসলামের সঙ্গে যুক্ত হন কথ্যক নাট্যগোষ্ঠীতে। মামুনুর রশীদের বাংলা থিয়েটারে ‘মানুষ’ নাটকে কিছুদিন অভিনয় করেন ডলি জহুর। আরণ্যক নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘ময়ূর সিংহাসন’ ও ‘ইবলিশ’ নাটকে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৮৫ সালে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ রচিত মোস্তাফিজুর রহমান প্রযোজিত বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রথম ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকে নীলু ভাবী চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন তিনি। আব্দুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ১৯৮৩ সালে প্রথম ‘নতুন বউ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৯২ সালে হুমায়ূন আহমেদের কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান পরিচালিত পূর্ণদৈর্ঘ্য ‘শঙ্খনীল কারাগার’ চলচ্চিত্রে রাবেয়া চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
ডলি জহুর টেলিভিশন নাটকের পাশাপাশি প্রায় দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ২০০৬ সালে ‘ঘানি’ চলচ্চিত্রে দারিদ্র্যপীড়িত রোকেয়ার অবরুদ্ধ জীবনের পোড়খাওয়া এক নারীর চরিত্রে মর্মস্পর্শী অভিনয় করে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।