জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা লালু’র ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৮ সালের ২১ জুলাই, ময়মনসিংহে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুদিবসে এই গুণি অভিনেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
লালু (এফ এম আবদুল আলী লালু) ১৯৩২ সালের ২০ অক্টোবর, ময়মনসিংহ জেলার চরপাড়ায়, জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর বাবার নাম ওয়াজেদ আলী ও মা জোবেদা খাতুন। লালু তাঁর পিতা পরিচালিত ‘পল্লী সমাজ’ নামে একটি নাটকে প্রথম অভিনয় করেন।
অভিনয় পাগল লালু, অভিনয়ের সুযোগের জন্য একসময় ঢাকায় চলে আসেন।
সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘সূর্যস্নান’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে, লালু চলচ্চিত্রে আসেন । ছবিটি মুক্তিপায় ১৯৬২ সালে। লালু অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র মধ্যে- ধারাপাত, মাটির পাহাড়, দুই দিগন্ত, অবাঞ্চিত, মেহের বানু, রূপবান, জানাজানি, নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা, আবির্ভাব, নাচ ঘর, পরশমণি, রাজা এলো শহরে, সাত রঙ, ক খ গ ঘ ঙ, এখানে আকাশ নীল, সোনালি আকাশ, সন্তান, মানুষ অমানুষ, রংবাজ, জিঘাংসা, দস্যু বনহুর, তরুলতা, চেনা অচেনা, প্রতিকার, বধূ বিদায়, মধুমিতা, অংগার, অনুরাগ, কথা দিলাম, পুত্রবধূ, লাল মেমসাহেব, স্বামীর ঘর, অচেনা অতিথি, লাল কাজল, লেডি ইন্সপেক্টর, অন্যতম।
মঞ্চ-বেতার-টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেতা লালু বেশিরভাগই কৌতুক চরিত্রে অভিনয় করতেন। টিভিতে নাটকের পাশাপাশি বিভিন্ন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও জনপ্রিয় সব হাসির সিরিয়ালেও অভিনয় করতেন তিনি। বিটিভির এক সময়ের জনপ্রিয় কমিক সিরিয়াল ‘ত্রিরত্ন’সহ তিনি অভিনয় করেছেন- ঘড়োয়া, আনোয়ারা এবং ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান বহুরূপীতেও ।
আশির দশকে বিটিভিতে প্রচারিত, প্রয়াত ফজলে লোহানীর ‘যদি কিছু মনে না করেন’ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের ‘কইনচাইন দেহি’ খ্যাত দুই তুমুল জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতার মধ্যে একজন হলেন, এই লালু।
এফ এম আবদুল আলী লালু বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন বোর্ডে চাকুরী করতেন। ১৯৮৯ সালে তিনি চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের সিনেমার প্রথম দিকে যে কয়জন কৌতুক অভিনেতা, সিনেমাপর্দায় হাসির ঝড় তুলেছেন, কৌতুক অভিনয়কে সমৃদ্ধ করেছেন, লালু তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে অভিনয়ের মাধ্যমে অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন, এই গুণি অভিনেতা।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এফ এম আবদুল আলী লালু চিরঅম্লান।