আজাদ আবুল কাশেম: জনপ্রিয় অভিনেতা সুজা খন্দকার-এর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৯৭ সালের ২ মার্চ, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। প্রয়াত এই গুণি অভিনেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
অভিনেতা সুজা খন্দকার ১৯৪১ সালের ২৮ জানুয়ারি, পাবনা জেলায় জন্মগ্রহন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা এবং সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রী সম্পন্ন করেন। বিমান-এ চাকরি করতেন তিনি।
মজার মানুষ সুজা খন্দকার, বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত, ১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওরা ১১ জন’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে আসেন।
তাঁর অভিনীত অসংখ্য ছবি’র মধ্যে উউল্লেখযোগ্য- পায়ে চলার পথ, দেনা-পাওনা, সাধু শয়তান, সুজন সখি, সারেং বউ, তাসের ঘর, সখি তুমি কার, সুখের সংসার, এখনই সময়, পেনশন, তিনকন্যা, মান অভিমান, সাহেব, অচেনা মানুষ, লালু সর্দার, বিক্ষোভ, তোমাকে চাই, দেনমোহর, মায়ের অধিকার, আদরের সন্তান, প্রিয় তুমি, ইত্যাদি।
চলচ্চিত্র ছাড়াও সুজা খন্দকার, মঞ্চ, বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত একজন নাট্যশিল্পী ছিলেন। এক সময়ে টেলিভিশন নাটকেও আলোচিত ও তুমূল জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাঁর অভিনীত টিভিনাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- এইসব দিনরাত্রি, দূরে কোথাও, ফেরা, তার কথা ও আমার কথা, টেনশন, সংশপ্তক, রূপনগর, হাসি খুশি, আজ ররিবার, মোহর আলী, প্রভৃতি।
টিভি বিজ্ঞাপনেও তাঁর জনপ্রিয়তা ও চাহিদা ছিল প্রচুর । তাঁর আলোচিত ও জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনচিত্রগুলোর একটি হলো, কারেন্ট জালে জাটকা ইলিশ মাছ ধরার ওপর করা। ‘সাদেক আলী’রূপী সুজা খন্দকারের মুখে ছড়ায় ছড়ায় সংলাপ বলা~ ‘মাছের গুষ্ঠী দেখাও ফাল/লগে আনছি কারেন্ট জাল,/ কপালের ফের কী আর করা/আন্ডা-বাচ্চাসহ পড়বা ধরা,/ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকা/কারেন্ট জালে আটকা’। এত সুন্দর বিজ্ঞাপনচিত্র ছিল যে, এসব প্রচারের সময় দর্শকদের চোখ আটকে থাকতো টেলিভিশন পর্দায়। এছাড়াও তাঁর করা, ওরস্যালাইন এবং বৃক্ষ ও পরিবেশ উন্নয়ন বিজ্ঞাপনের কথাও দর্শক মনে রাখবে।
তাঁর অভিনয়শৈলী ছিল দেখার মতো। সব বয়সী দর্শকদের কাছেই তিনি ছিলেন ভালো লাগার, ভালোবাসার মানুষ। প্রতিভাবান গুণী অভিনেতা সুজা খন্দকার, দর্শক হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর অভিনয় গুণে।