জনপ্রিয় অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চু’র চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৭ সালের ২৮ জুন, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। অসাধারণ গুণি এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি বিন্ম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
নাজমুল হুদা বাচ্চু ১৯৩৮ সালের ১১ জুলাই, মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে গ্রাজুয়েশন করেন। ছাত্রাবস্থায়ই তিনি রেডিওতে গান গাইতেন।
১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, এহতেশাম পরিচালিত ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন নাজমুল হুদা বাচ্চু। তিনি আরো যেসব ছবিতে কন্ঠ দিয়েছেন তারমধ্যে- চান্দা, জোয়ার এলো, নতুন সুর, ফির মিলেঙ্গে হাম দোনো, ভানুমতি, রংবাজ, এপার ওপার, কার পাপে, সুখে থাকো, শুভদা, উল্লেখযোগ্য।
কন্ঠশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে আসা নাজমুল হুদা বাচ্চু, একসময় হয়ে যান জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ- আঁকাবাঁকা, বধূবিদায়, কি যে করি, সারেং বৌ, অলংকার, মধুমিতা, অচেনা অতিথি, সূর্য দীঘল বাড়ী, সখি তুমি কার, কলমীলতা, জীবন মৃত্যু, স্বামী, গাংচিল, এখনই সময়, ঘরজামাই, বাজিমাৎ, হাসি কান্না, ভালো মানুষ, চিত্রানদীর পাড়ে, শুভদা, বেহুলা লক্ষিন্দর, শঙ্খনীল কারাগার, চন্দ্রকথা, সন্তান যখন শত্রু, শ্রাবণ মেঘের দিন, বিদ্রোহী পদ্মা, চন্দ্রগ্রহণ, রানওয়ে, ডাক্তার বাড়ী, দরিয়া পাড়ের দৌলতী, অজ্ঞাতনামা, ইত্যাদি।
কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘রূপকুমারী’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্রের সংলাপ লিখেছেন, নাজমুল হুদা বাচ্চু।
শুধু চলচ্চিত্রেই নয়, প্রতিভাবান এই অভিনেতা অভিনয় করেছেন, মঞ্চ-বেতার ও টেলিভিশনে। তিনি অসংখ্য টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেন । টিভি নাটকেও তিনি ছিলেন সমান জনপ্রিয়।
টেলিভিশনের বিখ্যাত নাটক ‘লালন ফকির’-এর সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন, নাজমুল হুদা বাচ্চু। বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র বিভিন্ন নাট্যাংশে নিয়মিত দেখা যেতো তাঁকে। তিনি কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছেন।
ব্যাক্তিজীবনে নাজমুল হুদা বাচ্চু, লিনা নাজমুল-এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের তিন কন্যা সন্তান রয়েছে।
অভিনেতা, সংলাপ লেখক, কন্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক নাজমুল হুদা বাচ্চু। শিল্প-সংস্কৃতি ভুবনে প্রতিটি শাখায় তাঁর সফল পদচারণায় নিজেকে উপস্থাপন করেছেন বিস্ময়কর এক প্রতিভায়। মঞ্চ-বেতার-টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র- সকল ক্ষেত্রে তাঁর সফল উপস্থিতি, প্রতিটি মাধ্যমকে করেছে সমৃদ্ধ । তিনি নিজেও হয়েছেন জনপ্রিয়-প্রসংশিত ও সম্মানিত।
বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের গুণী মানুষ নাজমুল হুদা বাচ্চু চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আমাদের কাছে।