আজাদ আবুল কাশেম: জনপ্রিয় অভিনেতা সালেহ আহমেদ-এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। প্রয়াত এই প্রতিভাবান অভিনয়শিল্পীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
সালেহ আহমেদ ১৯৩৭ সালে, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার দীঘলকান্দি গ্রামে, জন্মগ্রহণ করেন।
শৈশব থেকেই তিনি অভিনয়ের প্রতি ঝুঁকে পরেন। এক সময় ময়মনসিংহ ভিত্তিক নাট্যদল ‘অমরাবতী নাট্যমঞ্চ’তে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পূর্বে থেকেই তিনি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান টেলিভিশনে (বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশন) নিয়মিত অভিনয় করতেন।
সালেহ আহমেদ অভিনয়ের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাকুরী করতেন। ১৯৯১ সালে, চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
কথাসাহিত্যিক-নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। সালেহ আহমেদ অভিনীত নাটকসমূহের মধ্যে- শীতের পাখি, ওপারে নিলয়, অরণ্যের সুখদুঃখ, ঠিকানা, শ্যাওলা, অয়োময়, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, জোছনার ফুল, বাউণ্ডুলে এক্সপ্রেস, দ্বিতীয় জীবন, নিতু তোমাকে ভালোবাসি, আড়াল, শুধু তোমার জন্য, মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম, হাবলংগের বাজার, উড়ে যায় বকপক্ষী, সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড, পিশাচ মকবুল, উল্লেখযোগ্য।
নাটকের পাশাপাশি তিনি বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন । তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে আছে- আগুনের পরশমণি, আমার আছে জল, শ্রাবণ মেঘের দিন, মেড ইন বাংলাদেশ, প্রভৃতি।
ব্যক্তিগত জীবনে সালেহ আহমেদ, মুসলিমা আহমেদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের তিন মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে তিন বছর আগে মারা গেছে। বাকি দুই মেয়ে অবিবাহিত, চাকরী করছে। ছেলে সরকারী চাকরী করছে (জনস্বাস্থ্য বিভাগ)।
একজন বড় মাপের গুণী অভিনেতা ছিলেন সালেহ আহমেদ। ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে অসংখ্য দর্শক নন্দিত টিভি নাটকে, নানা ধরণের চরিত্রে সুন্দর-সাবলীল অভিনয় করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রেও তাঁর জনপ্রিয়তার কমতি ছিল না।
এক সময়ের টেলিভিশন নাটকের এই দাপুটে অভিনেতা, কয়েক বছরধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগে, অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করেন। প্রতিভাবান মেধাবী অভিনেতা সালেহ আহমেদ, অনন্তলোকে ভালো থাকুন এই আমাদের প্রার্থণা।