আজাদ আবুল কাশেম: চিত্রনায়িকা জবা চৌধুরী’র দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২০ সালের ৩ মে, দিনাজপুরে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। প্রয়াত এই অভিনয়শিল্পীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
জবা চৌধুরী (জোবায়দা খাতুন) ১৯৪৭ সালে, দিনাজপুরের রানীর বন্দর এলাকার গছাহার গ্রামে, জন্মগ্রহণ করেন। মা-বাবা নাম রেখেছিলেন জোবায়দা খাতুন। সিনেমায় আসার পর নাম বদলে হন জবা চৌধুরী । তাঁর বাবা আফান উদ্দিন ছিলেন একজন নাট্যশিল্পী। তিনিও ছোটবেলা থেকে নাচের সাথে জড়িত ছিলেন।
জবা চৌধুরী ১৯৬৭ সালে, খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকায় আসেন । ঢাকায় এসে তিনি মঞ্চনাটকের সাথে জড়িত হন। সেই সময়ে ‘উদয়নালা’, ‘সিরাজউদ্দৌলা’, ‘টিপু সুলতান’, ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘ঈসা খাঁ’সহ বেশ কিছু নাটকে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন।
একসময় জবা চৌধুরী নৃত্যশিল্পী ও পরবর্তিতে নায়িকা হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন।
তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ইবনে মিজান পরিচালিত ‘কত যে মিনতি’ মুক্তিপায় ১৯৭০ সালে । জবা চৌধুরী অভিনীত অন্যান্য ছবিগুলো- সতিনারী, বাংলার ২৪ বছর, বিচার, ডাকু মনসুর, মালকা বানু ও জিঘাংসা অন্যতম।
‘পাখির বাসার মতো দুটি চোখ তোমার, ঠিক যেন নাটোরের বনলতা সেন’ খুরশিদ আলম ও রুনা লায়লার গাওয়া অতি জনপ্রিয় এই গানে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছিলেন, নায়িকা জবা চৌধুরী-নায়ক ওয়াসিম । এই গান যেমন জনপ্রিয়তা পায়, তেমনি ‘জিঘাংসা’ ছবিটিও সুপারহিট হয়। আর এই ছবির মাধ্যমেই নায়িকা হিসেবে বহুল আলোচিত হন জবা চৌধুরী।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রথম এ্যাকশন নায়িকা ছিলেন তিনি।
‘জিঘাংসা’ ছবিটি সুপারহিট হওয়ার পর অনেক প্রযোজক- পরিচালক তাদের ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেও, আর কোনো ছবিতে অভিনয় করেননি জবা চৌধুরী।
‘জিঘাংসা’ ছবির প্রযোজক আবু তাহেরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে, সংসারী হয়ে যান তিনি। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান ছিলো না। ১৯৯৩ সালের পর ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। তাঁর স্বামী প্রযোজক, প্রদর্শক-পরিচালক তাহের চৌধুরী আরো অনেক আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
অন্তরালে থাকা একসময়ের আলোচিত এই চিত্রনায়িকা জবা চৌধুরী, একেবারে নীরবে-নিভৃতে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। অনন্তলোকে তিনি শান্তিতে থাকুন এই আমাদের প্রার্থণা।