এ কে আজাদ: অরুণ রায়। চলচ্চিত্রগ্রাহক। একজন প্রতিভাবান সৃজনশীল চলচ্চিত্রগ্রাহক। কাজ করেছেন প্রখ্যাত সব চলচ্চিত্রকারদের সাথে, অনেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক ছিলেন তিনি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানাবিধ পুরস্কার ও সম্মাননা।
আমাদের চলচ্চিত্র ভুবনের গুণী মানুষ অরুণ রায় এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৯৮ সালের ৬ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। প্রয়াত এই গুণী চলচ্চিত্রগ্রাহক এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
চিত্রগ্রাহক অরুণ রায় ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, সিরাজগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চলচ্চিত্রে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ শুরু করেন, প্রখ্যাত চলচ্চিত্রগ্রাহক কি এম জামান এর সাথে ‘সোনার কাজল’ ছবির মাধ্যমে। পরে তিনি আরো কাজ করেন আরেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রগ্রাহক আফজাল চৌধুরীর সাথে।
চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান পরিচালিত ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আনোয়ারা’ ছবির মাধ্যমে একক চলচ্চিত্রগ্রাহক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন অরুণ রায়।
অরুণ রায় আরো যেসব চলচ্চিত্রে, চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন তারমধ্যে- জুলেখা, মধুমালা, দুই ভাই, আনাড়ি, পায়েল, জাঁহা বাজে শেহনাই, সংসার, দাগ, বিজলি, একই অঙ্গে এত রূপ, যে আগুনে পুড়ি, পিতাপুত্র, স্টপ জেনোসাইড, নাচের পুতুল, এ স্টেট ইজ বর্ণ, লিবারেশন ফাইটার্স, জীবন সংগীত, মানুষের মন, অধিকার, ধীরে বহে মেঘনা, শাপমুক্তি, আঁধারে আলো, বধূ বিদায়, দোস্ত দুশমন, জয় পরাজয়, কুয়াশা, আরাধনা, সোহাগ, বারুদ, চন্দ্রলেখা, পুত্রবধূ, কথা দিলাম, রজনীগন্ধা, লালু বুলু, জননী, জনি, ভাই আমার ভাই, আকাশপরি, আমিই ওস্তাদ, সারেন্ডার, ভাইজান, মায়ের আশীর্বাদ, কালিয়া, গৃহবধূ, বাংলার নায়ক, টাইগার, প্রভৃতি অন্যতম।
অরুণ রায় ‘ধনরত্ন’ নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন, এই চলচ্চিত্রটি মুক্তিপায় ১৯৯০ সালে।
চলচ্চিত্রগ্রাহক অরুণ রায় তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
‘বধূ বিদায়, (১৯৭৮), ‘জনি’ (১৯৮৩) এবং ‘ভাইজান’ (১৯৮৯) চলচ্চিত্রের জন্য, তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন ।
অত্যান্ত গুণী এই চলচ্চিত্রগ্রাহক তাঁর সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে এদেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে সমৃদ্ধ করে গেছেন । বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। গুণী চলচ্চিত্রগ্রাহক অরুণ রায় অনন্তলোকে ভালো থাকুন- এই প্রার্থণা করি।