আজাদ আবুল কাশেম: চলচ্চিত্র পরিচালক হাছিবুল ইসলাম মিজান-এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। প্রয়াত এই চিত্রপরিচালক এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
হাছিবুল ইসলাম মিজান ১৯৫৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলার কলেজ রোডে, জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মতিয়ার রহমান শেখ ও মাতার নাম নূরজাহান বেগম। নয় ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। লেখা-পড়া করেছেন পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজে।
প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক দারাশিকো’র সহকারী হিসেবে আশিরদশকে চলচ্চিত্রে আসেন
হাছিবুল ইসলাম মিজান। পরবর্তীতে খ্যাতিমান চিত্রপরিচালক এস এম শফি’র সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন তিনি।
তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রেমের কসম’ মুক্তিপায় ১৯৯৮ সালে। তিনি আরো পরিচালনা করেন- আমার স্বপ্ন তুমি, জন্ম, কপাল, তুমি আছো হৃদয়ে, এই চলচ্চিত্রগুলো।
ফুলবানু, মনে মনে প্রেম ও চাই শুধু তেমাকে নামে তাঁর আরো তিনটি চলচ্চিত্র নির্মাণাধীন ছিল। এই ছবিগুলোর কাজ তিনি শেষ করে যেতে পারেননি।
তিনি ছিলেন একধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, কাহিনীকার ও অভিনেতা।
হাছিবুল ইসলাম মিজান টেলিভিশনের জন্য চলচ্চিত্রবিষয়ক অনুষ্ঠান, নাটক এবং টেলিফিল্মও নির্মান করেছেন। ‘কি আশায় বাঁধি খেলা ঘর’ নামে ২৬ পর্বের একটি ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করেছিলেন তিনি, যা ২০০১ সালে ‘চ্যনেল আই’ তে প্রচারিত হয়। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্যাকেজ নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছিলেন তিনি।
এটিএন বাংলায় সাপ্তাহিক সিনেমা বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘তিব্বত তারার দেশে’ এবং পরবর্তীতে প্রতি সপ্তাহে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নিয়ে ‘শুভমুক্তি’ নামে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন হাছিবুল ইসলাম মিজান। পাশাপাশি পরিচালনা করেন, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান ‘রং তামাশা’, যা প্রতি মাসে প্রচারিত হত।
ব্যক্তিজীবনে হাছিবুল ইসলাম মিজান ১৯৮৮ সালে, রাশিদা আক্তারের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০১৫ সালে তাঁর সহধর্মিণীও পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তাদের তিন ছেলে- রাশেদুল ইসলাম ইফাজ, আমিনুল ইসলাম আলভী এবং আরিফুল ইসলাম আলিফ।
হাছিবুল ইসলাম মিজান যে কয়টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, সবক’টিই ছিল পরিছন্ন নির্মল প্রেমকাহিনী নির্ভর ও সুস্থ বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের কাছে তিনি, খুবই নিরীহ, ভদ্র, বিনয়ী, ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন । কমসংখ্যক চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেও, তিনি তাঁর পরিছন্ন চলচ্চিত্রকর্মের মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।