চলচ্চিত্র পরিচালক জীবন রহমান-এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারী মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। প্রয়াত জীবন রহমানের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।
জীবন রহমান ১৯৬৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, কিশোরগঞ্জ জেলার, পাকুন্দিয়া উপজেলার মঠখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পাকুন্দিয়া হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকা কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি এবং বি.কম পাস করেন তিনি।
চলচ্চিত্র পরিচালক খসরু নোমানের সাথে পরিচয়ের সুবাদে জীবন রহমান চলচ্চিত্র জগতে আসেন। খসরু নোমান পরিচালিত ‘সোহেল রানা’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসাবে চলচ্চিত্রে প্রথম নাম লেখান । এরপরে কাজ করেন, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, কাজী হায়াৎ’সহ বেশ কয়েকজন পরিচালকের সাথে।
জীবন রহমান পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘গহর বাদশা বানেছা পরী’। তাঁর নির্মিত প্রথম ছবিই সুপারহিট হয়। তিনি হয়ে যান আলোচিত চিত্রপরিচালক। তাঁর পরিচালিত অন্যান্য ছবি- হুলিয়া, আজকের সন্ত্রাসী, প্রেম যুদ্ধ, আশার প্রদীপ, আলী কেন গোলাম, মহা সংগ্রাম, উত্তর দক্ষিণ, কাকনদাসী, এবং ঋণশোধ, অন্যতম।
এছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তিযুদ্ধের দুটি ডকুমেন্টারী ‘স্বপ্ন’ এবং ‘সম্মুখ সমর’ নির্মাণ করেছেন। এই ডকুমেন্টারী দুটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
‘মহা সংগ্রাম’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করে ২০০৫ সালে, তারুণ্য যুব কল্যাণ সংঘ কর্তৃক জীবন রহমান শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে ‘ভাসানী স্মৃতি পুরস্কার’ লাভ করেন।
চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি তিনি অভিনয়ও করতেন।
জীবন রহমান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন একবার।
অনেক ব্যবসাসফল ছবির পরিচালক হয়েও জীবন রহমানের শেষ জীবন কেটেছে অর্থনৈতিক সংকটে। নানাবিধ রোগ বাসা বেঁধেছিল তাঁর শরীরে, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে যথাযথ চিকিৎসাও করাতে পারেননি।
চিকিৎসা ব্যয়ে সহায়সম্বল হীন হয়ে, শেষ জীবন কেটেছে তাঁর মেয়ে-জামাতার বাড়িতে। চলচ্চিত্র নির্মাতাদের এমন অর্থনৈতিক দৈন্যতা-দুর্বিষহ জীবন, আমাদের কারো কাম্য নয়। জীবন রহমান পরপারে চির শান্তিতে থাকুন, এই প্রার্থণা করি।