চলচ্চিত্র পরিচালক আজহারুল ইসলাম খান-এর ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৯ সালের ৭ মে, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। প্রয়াত এই গুণী চিত্রপরিচালকের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
আজহারুল ইসলাম খান ১৩৪১ সালের ১৯ পৌষ/১৯৩৫ সালের ৩ জানুয়ারি, ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে, জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বি.এ পপর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।
১৯৬৩ সালে, ‘বালা’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথমে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি। সৈয়দ আউয়াল পরিচালিত এই ছবিটির শ্যুটিং শুরু হয় ১৯৬৪ সালে। কাজ শেষ হয়ে মুক্তি পেতে সময় লেগে যায় অনেক(১৯৬৭)। এর মাঝে আজহারুল ইসলাম খান চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন। যতটুকু জানা যায় তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি ‘গুনাই বিবি’ মুক্তিপায় ১৯৬৬ সালে।
আজহারুল ইসলাম খান যেসব চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন- যে আগুনে পুড়ি (তত্বাবধায়ক), চোখের জলে (যৌথভাবে), স্মাগলার (যৌথভাবে), পাগলা রাজা, জোকার, সুখে থাকো, তালাক, তওবা, সহযাত্রী, ছেলে কার, মরণের পরে, ভাই, প্রভৃতি।
আজহারুল ইসলাম খান অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- গুনাই বিবি, অপরিচিতা, জোকার, চোখের জলে, মৌ-চোর, দূর থেকে কাছে, খোঁজ খবর, সততা, দায়ী কে, ভেজা চোখ, চোরের বউ, দাঙ্গা, স্বপ্নের ঠিকানা, মহামিলন, সত্যের মৃত্যু নেই, আজকের সন্ত্রাসী, মগের মুল্লুক, কে আমার বাবা, লণ্ড ভণ্ড, ঝড়, রংবাজ বাদশা, চেয়ারম্যান, ইতিহাস, ভাইয়া, টপ সম্রাট, বিগ বস, একখণ্ড জমি, কঠিন সীমার, ভাইয়ের শত্রু ভাই, অন্ধকারে রাজনীতি, জীবনের গ্যারান্টি নাই, নষ্ট, বাঁচাও, বাপ বেটার লড়াই, মোল্লা বাড়ীর বউ, দোজখ, এ্যাকশন লেডি, হিরা আমার নাম, দাফন, সিটি রংবাজ, হৃদয়ের কথা, বৃষ্টি ভেজা আকাশ, আমি বাঁচতে চাই, শত্রু শত্রু খেলা, সাজঘর, জমজ, ধোকা, স্বামীর সংসার, জজের রায়ে ফাঁসি, দুঃখিনী জোহরা, বাবার জন্য যুদ্ধ, জন্ম তোমার জন্য, বৃত্তের বাইরে, জমিদার, ইত্যাদি।
একজন ভালো মানের অভিনেতা ছিলেন আজহারুল ইসলাম খান। চলচ্চিত্র এছাড়াও তিনি টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন । তাঁকে কিছু বিজ্ঞাপন চিত্রেও অভিনয় করতে দেখা গেছে।
আজহারুল ইসলাম খান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি’সহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জনপ্রিয় সামাজিক ছবি’র সফল নির্মাতা ছিলেন আজহারুল ইসলাম খান। তাঁর প্রায় সব চলচ্চিত্রই দর্শকপ্রিয়, ব্যবসা সফল ও আলোচিত হয়েছে। একজন সুস্থধারার-ভালো মানের চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে সুপরিচিতি ছিল তাঁর।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রজগতে, একজন সাদা-সিধে ভালো মানুষ হিসেবেও তাঁর সুখ্যাতি ছিল, সবার কাছে ছিলেন শ্রদ্ধেয় জন ।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের সমৃদ্ধিতে অনন্য অবদান রেখে যাওয়া আজহারুল ইসলাম খান, তাঁর মূল্যবান সৃষ্টিকর্মের মধ্যমে বেঁচে থাকবেন যুগের পরে যুগ।