English

24 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

চলচ্চিত্রব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া। চলচ্চিত্র পরিচালক-গীতিকার-স্থিরচিত্রগ্রাহক-কাহিনী ও চিত্রনাট্যকার। একজন বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব। বড় ভাই সফদার আলী ভুঁইয়ার হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি।

তাঁর পরিবারের অনেকেই চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত। বলা যেতে পারে আদর্শ চলচ্চিত্রপরিবারের মতো, চলচ্চিত্রের জন্য কাজ করেগেছেন আমৃত্যু । খুবই অল্প বয়সে তিনি প্রয়াত হন। অকাল প্রয়াত গুণী চলচ্চিত্রব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া’র মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৮০ সালের ৯ জানুয়ারি, মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৮ বছর। চলচ্চিত্রের এই গুণী মানুষটির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ১৯৪২ সালে, গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার, ভাওয়াল বাড়িয়া ইউনিয়নের কামাড়িয়া গ্রামে, জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মওলানা মোসলেহউদ্দিন ভুঁইয়া। তিনি ভাওয়ালবাড়িয়া হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে, সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ছিলেন পঞ্চম। তাঁর বড় ভাই সফদার আলী ভুঁইয়া ছিলেন একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক-প্রযোজক। ছোট ভাই তৈয়বুর রহমান ভুঁইয়া ছিলেন চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রগ্রাহক।

সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া ১৯৬৩ সালে, বড় ভাই সফদার আলী ভুঁইয়ার হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন সহকারি পরিচালক হিসেবে। খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার সালাহউদ্দিন ও খান আতা’র সহকারি পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছন তিনি।

সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া মাসিক ‘ঝিনুক’ পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। বড় ভাই সফদার আলি ভুঁইয়া পরিচালিত চলচ্চিত্রে তিনি গীতিকার ও স্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন।

সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘পারুলের সংসার’ মুক্তিপায় ১৯৬৯ সালে। এরপর তিনি আরো পরিচালনা করেন- ‘নিমাই সন্যাসী’, ‘দস্যুরাণী’, ‘শ্রীমতী ৪২০’, ও ‘একালের নায়ক’। তাঁর পরিচালিত সর্বাধিক আলোচিত ও ব্যবসা সফল ছবি ‘দস্যুরাণী’।

সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া অনেক ছবিতে গান লিখেছেন। “শোনেন শোনেন জাঁহাপনা শোনেন রানী ছয়জনা,
শোনেন বলি নতুন করি, পুরান ঘটনা”।
এই জনপ্রিয় গানটির রচয়িতা সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া। “থাকবোনা আর এই আবেশে, চলরে মন আপন দেশে”
‘দস্যুরানী’ ছবির এই গানটি’সহ, সে সময়ে তাঁর লেখা আরও বেশ কিছু গান জনপ্রিয় হয়েছে ।
এছাড়াও তিনি লিখেছেন, “মন চায় তোর মনডারে গামছা দিয়া বান্ধি”, “লাগ ভেল্কি লাগরে চোখে মোখে লাগরে” (ছবি-দস্যুরাণী), “নিমাই দাঁড়ারে -দাঁড়ারে নিমাই” (ছবি-নিমাই সন্যাসী), “বড় দুঃখের কথা ভাই আজব কথা ভাই, আমার সাধের সোনার বাংলায় আর সোনা নাই”(ছবি-একালের নয়ক) ইত্যাদি।

ব্যক্তিজীবনে সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া ১৯৭০ সালে, জাহানারা ভূঁইয়া’র সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর সহধর্মিণী জাহানারা ভূঁইয়া একজন অভিনেত্রী-গীতিকার-পরিচালক । তাঁর মেয়ে শিরিন জাহান আঁখি এক সময় শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ছেলে জাহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া নয়ন আমেরিকা প্রবাসী। সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া’র এক শ্যালক মঞ্জুর এলাহি চলচ্চিত্র প্রদর্শক, আরেক শ্যালক প্রয়াত চিত্রপরিচালক আজীজ আহমেদ বাবুল।

সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া ও সফদার আলী ভূঁইয়া দুই ভাই মিলে ষাটের দশকে, উর্দ চলচ্চিত্রের কবল থেকে বাংলা চলচ্চিত্রকে রক্ষা করার জন্য লোকগাঁথাভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। এক সময় তাদের নির্মিত লোকগাঁথাভিত্তিক চলচ্চিত্র জনপ্রিয় ও ব্যবসায়ীকভাবে সফল হয়। সেই সময়ে এদেশের চলচ্চিত্রশিল্প বাণিজ্যিকভাবে ঘুরে দাঁড়ায়।

সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া একাধারে, চলচ্চিত্র পরিচালক-গীতিকার-স্থিরচিত্রগ্রাহক-কাহিনী ও চিত্রনাট্যকার ছিলেন। এই বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন মেধাবী মানুষটি খুবই অল্প বয়সে প্রয়াত হন। এদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে, সিরাজুল ইসলাম ভুঁইয়া ও সফদার আলী ভূঁইয়া এই দুই ভাইয়ের অবদান অবশ্যই স্মরণীয়।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন