একে আজাদ: শিল্পী চক্রবর্তী। চলচ্চিত্র পরিচালক। পারিবারিক-সামাজিক গল্পনির্ভর চলচ্চিত্রের এক গুণী নির্মাতা ছিলেন তিনি। তাঁর নির্মিত প্রতিটি চলচ্চিত্রই সিনেমাদর্শক কর্তৃক প্রসংশিত হয়েছে। একজন সাদাসিধে ভালো মানুষ হিসেবে চলচ্চিত্র সংশ্লষ্টদের কাছে সুপরিচিত ছিলেন তিনি। এই গুণী চিত্রপরিচালক শিল্পী চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২৪ সালের ৭ মার্চ, ৭১ বছর বয়সে, ঢাকায় পরলোকগমন করেন। প্রয়াত এই গুণি মানুষটির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
শিল্পী চক্রবর্তী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া গ্রামে, জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবারের অনেকেই চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত।
খ্যাতিমান চিত্রপরিচালক দিলীপ বিশ্বাস ও সংগীত পরিচালক সত্য সাহার শ্যালক, প্রযোজক রমলা সাহা ও প্রযোজক গায়ত্রী বিশ্বাসের ভাই, পরিচালক দেবাশিষ বিশ্বাস, অভিনেতা সুমন সাহা ও সংগীত পরিচালক ইমন সাহার মামা ছিলেন শিল্পী চক্রবর্তী। তাঁর বড় ভাই চিত্ত চক্রবর্তীও বিভিন্নভাবে চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত ছিলেন।
শিল্পী চক্রবর্তী চলচ্চিত্রে তাঁর কর্ম জীবন শুরু করেন প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক আজিজুর রহমানের সহকারী হিসেবে। এরপরে আরও অনেক গুণী নির্মাতাদের সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
শিল্পী চক্রবর্তী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘মীমাংসা’ মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে। তাঁর পরিচালনার অন্যান্য ছবির মধ্যে রয়েছে- চরমপত্র, আমার আদালত, রঙ্গিন উজান ভাটি, রঙিন বিনি সুতার মালা, সবার অজান্তে, অন্তরে ঝড়, তোমার জন্য পাগল প্রভৃতি । বাণিজ্যসফল চলচ্চিত্র “স্বপ্নের ঠিকানা” (১৯৯৫)-এর নেপথ্যকর্মী ছিলেন শিল্পী চক্রবর্তী।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির কার্যকরী পরিষদে ছিলেন বিভিন্ন সময়ে। বড় কোন পদে না থাকলেও এই সংগঠনের প্রতিটি কার্যক্রমে ছিলো তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। চলচ্চিত্রশিল্প সংশ্লিষ্ট সকলের প্রিয় মুখ ছিলেন শিল্পী চক্রবর্তী। তাঁকে চলচ্চিত্রশিল্পের সকলেই ভালোবেসে গদু’দা বলে ডাকতেন।
ব্যক্তিজীবনে শিল্পী চক্রবর্তী ১৯৭৭ সালে বিয়ে করেন স্মৃতি চক্রবর্তীকে। তাদের দুই ছেলে অমিত চক্রবর্তী ও সুমিত চক্রবর্তী। উল্লেখ্য যে, শিল্পী চক্রবর্তীর স্ত্রী- স্মৃতি চক্রবর্তী ২০০২ সালে পরলোকগত হন।