একে আজাদ: হারুনর রশিদ। চলচ্চিত্র পরিচালক। অত্যন্ত মেধাবী প্রতিভাবান একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। অভিনয়ও করেছেন। লিখেছেন চিত্রনাট্য ও গল্প। অল্প সংখ্যক চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেও, একজন গুণী নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন সুপরিচিতি। নিজের নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্রেই পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
এই গুণি চলচ্চিত্রকার হারুনর রশিদ এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২৪ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। প্রয়াত এই গুণি মানুষটির স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
হারুনর রশিদ ১৯৪০ সালের ১৫ মার্চ, কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। এক সময় ঢাকায় আসেন এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন । ১৯৬৩ সালে, চিত্রপরিচালক সালাউদ্দিনের সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানসহ অনেক পরিচালকের সাথেই কাজ করেছেন। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘মেঘের অনেক রং’ (মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক) মুক্তি পায় ১৯৭৬ সালে।
ওই বছর তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ৫টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে ছবিটি। হারুনর রশিদ শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ফেরদৌসী রহমান, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র গ্রাহক হারুন অর রশিদ এবং শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী মাস্টার আদনান পুরস্কার অর্জন করেন ওই ছবির জন্য।
হারুনর রশিদ আরো যেসব চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তারমধ্যে- রঙ্গীন গুনাই বিবি, ভাগ্যবতী, ধনবান, অসতী, রূপবান কন্যা (ভারত), আমরা তোমাদের ভুলবনা, গৌরব (স্বল্পদৈর্ঘ্য) অন্যতম।
এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি টিভি নাটক ও ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেছেন ।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াঁও বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক পেয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মাননা।
চলচ্চিত্রের এই মানুষটি নিজের কাজ না থাকলে তিনি যে কোন ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত থাকতেন। এভাবে অনেকের সাথেই সহযোগী পরিচালক হিসেবে কিছু ছবিতে কাজ করেছেন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি’র সম্মানিত আজীবন সদস্য হারুনর রশীদ- মৃদুভাষী নিপাট ভদ্রলোক ও একজন ভালো মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কাছে। আমাদের চলচ্চিত্রের এই গুণী মানুষটি আজিমপুর কবরস্থানে তাঁর স্ত্রী’র কবরেই সমাহিত হয়েছেন।