ঈদুল ফিতরে মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘কাজল রেখার’ নায়িকা এই মন্দিরা।শুধু নায়িকা নয়, নাম ভূমিকায়ও তিনি।৪০০ বছর আগের রূপকথার গল্প বর্তমান সময়ে কাজল লেখার মাধ্যমে তুলে এনেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম।এমন গল্পের কাজলরেখা হয়ে উঠতে কম পরিশ্রম করতে হয়নি মন্দিরারও।দৃশ্যায়নে সেট থেকে শুরু করে পারিপার্শ্বিক পরিবেশে খাপ খাওয়ানোবেশ জটিল ব্যাপারই ছিল। পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম বললেন, ব্যাপারটি জটিল হলেও মন্দিরা সেটা ভালোভাবেই উথরে গিয়েছে। এখানে আমরা পালার গল্পকে সিনেমার বাস্তবতায় তুলে আনার চেষ্টা করছি। সেই গল্পে মন্দিরা হয়ে উঠেছে পুরোপুরি কাজলরেখা। সিনেমাটি দেখার পর একবারও মনে হবে না এটি মন্দিরার প্রথম সিনেমা।
যে মন্দিরাকে নিয়ে কথা হচ্ছে, সিনেমায় তিনি একেবারে নতুন হলে শোবিজে পথচলা বহুবছর আগেই। চ্যানেল আইয়ের সেরা নাচিয়ে রিয়েলিটি শো থেকে তাঁর পরিচিতি বাড়ে।এতে রানারআপ হয়ে আলোচনায় আসেন। তাঁকে নিয়ে ভাবনা শুরু হয় অনেক নির্মাতার। কাজ করেন বিজ্ঞাপন ও নাটকে। এবার তো বড় পর্দা।শোবিজের যাত্রার শুরুটা মন্দিরা জানালেন এভাবে, আমার পরিবারের কেউ শোবিজে নেই। নেই মানে একদমই নেই। তবে মা-বাবা ও দুই ভাই সবাই সংস্কৃতিমনা। সবাই আমাকে সাপোর্ট করে। তবে মায়ের ইচ্ছাটা সবচেয়ে বেশি। ছোটবেলা কেটেছে খুলনায়, সেখানে নাচের তালিম নিতাম। মা-ই আমাকে সবখানে নিয়ে যেতেন। নাচে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছি। একটা সময় নিজেরও স্বপ্ন বড় হতে থাকে। চ্যানেল আইয়ের রিয়েলিটি শো সেরা নাচিয়েতে নাম লেখানোর পর যখন রানারআপ হলাম, তখন অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে থাকি।
নাচের মেয়ে মন্দিরা। কমতি নেই শরীরী সৌন্দর্য। তাই নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব শুরু থেকেই তাঁর দরজায় কড়া নেড়েছে। কিন্তু মন্দিরা হুট করে এভাবে নায়িকা হতে চাননি। শেখে-পড়েই সিনেমায় আসতে চেয়েছেন। সে সময় তাই টিভিসি, ওবিসির কাজ করার প্রতিই মনোনিবেশ করেন। নামেন নাটকের অভিনয়েও। এরমধ্যে প্রস্তাব আসে কাজলরেখা হওয়ার।
নায়িকার মুখেই শুনুন, নাটকে অভিনয়ে যখন ব্যস্ত হচ্ছিলাম তখনই গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলো। তাঁকে আবার ছোটবেলা থেকে পছন্দ করতাম, পছন্দের পরিচালক হিসেবে। আমি যখন মনপুরা দেখি, তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। বড় হতে হতে মনপুরা ছবিটাই মাথায় ঢুকেছে। কারণ, ওটাই ছিল আমার প্রথম দেখা চলচ্চিত্র। পুরো পরিবার খুলনার শঙ্খ সিনেমা হলে ছবিটি দেখেছিলাম। সেই পরিচালকের সিনেমার প্রস্তাবে না করার সাহস আমার ছিলনা। মনে হচ্ছিল আমি তাঁর কাজ করার জন্যই অপেক্ষায় ছিলাম। সেই কাজলরেখা সেই অপেক্ষারই অবসান ঘটাল।
গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে কাজের সুযোগ পাওয়ায় দারুণ খুশি মন্দিরা। বলেন, ‘এ কাজটি করার আগে ছোট পর্দায় কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু সেলিম ভাইয়ের মতো এমন পরিচালক আমি পাইনি। সে আমার গুরু। শুরু থেকে এত সুন্দর করে অভিনয়টা আমাকে শিখিয়েছেন, মনে হয়েছে গল্প করতে করতে অভিনয় শিখেছি আমি। এত সুন্দর করে, সহজ করে অভিনয় শেখাতে পারেন, আমার জানা ছিল না। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ, বন্ধুর মতো। তাঁর সঙ্গে কাজ করে আমার খুবই ভালো লেগেছে।’
‘কাজলরেখা’পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ড্রিম প্রজেক্ট।মন্দিরা জানালেন, এটি তাঁর কাছেও এটি ড্রিম প্রজেক্ট। প্রথমত, এটি আমার প্রথম সিনেমা। দ্বিতীয়ত, এটি একটি চিরচেনা গল্পের সিনেমা। কাজল রেখা দিয়ে দর্শকদের মন জয় করতে চাই। যেন এভাবেই একটার পর একটা ভালো সিনেমায় অভিনয় করতে পারি।
অবশ্য কাজল রেখা মুক্তির আগেই‘নীলচক্র’ নামে আরও একটি ছবির শুটিং শুরু করেছেন মন্দিরা।কাজলরেখায় যেমন মন্দিরার নায়ক শরিফুল রাজ। এ নীলচক্রতেও রয়েছে দেশের অন্য এক জনপ্রিয় নায়ক। তিনি আরিফিন শুভ। যে নায়ক নায়িকার ছোটবেলার ক্রাশ বলেই মন্তব্য করেছেন। মন্দিরা জানান, ছোটবেলা থেকে আরিফিন শুভকে তাঁর ভালো লাগত। একটা সময় তাঁর ক্রাশ ছিলেন শুভ। এবার তাঁর সঙ্গে কাজ করছি। বিষয়টি আমার জন্য দারুণ ভালো লাগার ও আনন্দের।
‘নীলচক্র’ পরিচালনা করছেন মিঠু খান। এর চিত্রনাট্য ও কাহিনি বিন্যাস করেছেন নাজিম উদ দৌলা ও মিঠু খান।গল্পের প্যাটার্ন ডার্ক, সঙ্গে আরও কিছু আছে। তাই কাজলরেখা দিয়ে অভিষেকের পর নীলচক্রে দারুণ কিছু হয়ে উঠবেন বলেই আশাবাদের গল্প বললেন মন্দিরা।