এ কে আজাদ: সাকী। আবদুল্লাহ সাকী। অভিনেতা। বেশীরভাগ চলচ্চিত্রেই নেগেটিভ তথা ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে সাকী’কে । তবে তিনি সবচেয়ে ভালো অভিনয় করেছিলেন ‘প্রেমগীত’ চলচ্চিত্রে। এই ছবিতে তিনি ‘খান চাচা’ (পজিটিভ) চরিত্রে অভিনয় করে সেই সময়ে বেশ পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। এই অভিনেতাকে আমরা আজকের এইদিনে হারিয়েছি। গতকাল ছিলো অভিনেতা সাকী’র দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
তিনি ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট (২৭ আগস্ট রাত একটার পর), দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকে, জামালপুরের নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। প্রয়াত এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
অভিনেতা সাকী (আবদুল্লাহ সাকী) ১৯৫৬ সালে জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকে অভিনয় করার শখ ছিল তাঁর। জানা যায় স্কুল-কলেজের নাটকে অভিনয়ও করেছেন। লেখাপড়া শেষ করে যোগ দেন সরকারি চাকুরীতে।
প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর সঙ্গে সাকী’র ভালো সম্পর্ক ছিল। আর তাঁর মাধ্যমেই আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে চলচ্চিত্রঅভিনয়ে আসেন তিনি। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ছবিতেই বেশি দেখা যেত তাঁকে।
সাকী অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে- মাটির কোলে, গীত, ঝিনুক মালা, স্বামী-স্ত্রী, জাঁদরেল বউ, প্রেমগীত, মায়ের দোয়া, রাস্তার রাজা, গরিবের বন্ধু, হারানো প্রেম, আলিফ লায়লা আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ, বিজলী তুফান, নিশি রাইতে আইসো বন্ধু, গাদ্দারী, বিষাক্ত ছোবল, দাফন, তেজী মেয়ে, জজ ব্যারিষ্টার, তোমার জন্য মরতে পারি, অবুঝ শিশু, আসলাম ভাই, ভালোবাসা এক্সপ্রেস, একজন সঙ্গে ছিল, বায়ান্ন থেকে একাত্তর, ওয়ার্নিং, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
সাকী’কে বেশীরভাগ চলচ্চিত্রেই নেগেটিভ তথা ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তবে তিনি সবচেয়ে ভালো অভিনয় করেছিলেন ‘প্রেমগীত’ চলচ্চিত্রে। এই ছবিতে তিনি ‘খান চাচা’ চরিত্রে অভিনয় করে সেই সময়ে বেশ পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। এই ছবিতে তাঁর লিপ্-এ একটি গানও ছিল।
অভিনেতা সাকী সরকারি চাকুরী থেকে ২০০৭ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। এক সময় বেশ কিছু নাটকও প্রযোজনা করেন বলে জানা যায়। পরবর্তীতে তাঁর ইচ্ছা হয় গ্রামের বাড়ি চলে যাবেন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি গ্রামের বাড়ি জামালপুরেই ছিলেন।
মৃত্যুর আগে দুই বছরের বেশি সময়ধরে অসুস্থ ছিলেন ঢালিউড অভিনেতা আবদুল্লাহ সাকী। দুই-দুইবার স্ট্রোক করেন তিনি, এরপর গুরুতর অসুস্থ হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী হন।
অভিনেতা সাকীর এক ছেলে শাহ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সৌদ ও এক মেয়ে সোনিয়া সাকী। মেয়ে সোনিয়া সাকী, অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। সাকীর স্ত্রী নাহিদা সাকী মেয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন।
শখেরবশে অভিনয়ে আসা সাকী, চলচ্চিত্রে তেমন একটা নিয়মিত ছিলেন না। অভিনয় করেননি তেমন কোনো প্রধান চরিত্রেও।
তবুও যেসব চলচ্চিত্রে, যেসব চরিত্রে অভিনয় করেছেন, নিজ অভিনয়গুণেই মানুষের মনে একটা জায়গা করে নিয়েছিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা আবদুল্লাহ সাকী। অসংখ্য সিনেমাদর্শকের কাছে তিনি এখনও সুপরিচিত মুখ। বিশেষ করে ৯০ দশকের বাংলা সিনেমার ভক্তরা এখনও তাঁকে স্মরণে রেখেছেন এবং রাখবেন।