English

17 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

খ্যাতিমান বর্ষিয়ান স্থিরচিত্রগ্রাহক আবদুল খালেক-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: আব্দুল খালেক। চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রগ্রাহক। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের শুরুর দিকে, যাদের ঘামে-শ্রমে অবদানে এই চলচ্চিত্রশিল্প এগিয়ে গেছে, আব্দুল খালেক ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। একসময় ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও অভিজাত ফটো স্টুডিও ছিলো ‘কে ফটোগ্রাফার্স’, এই স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন বিখ্যাত আলোকিচিত্রী আব্দুল খালেক। সম্ভবত তিনিই এদেশের চলচ্চিত্রের প্রথম স্থিরচিত্রগ্রাহক। খ্যাতিমান বর্ষিয়ান স্থিরচিত্রগ্রাহক আবদুল খালেক-এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ, ৯৯ বছর বয়সে, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রয়াত এই গুণি মানুষটির স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

স্থিরচিত্রগ্রাহক আবদুল খালেক (আবদুল খালেক খলিফা) ১৯২০ সালের ২০ মার্চ, শরীয়তপুর জেলা জাজিরা থানার বিলাষপুর ইউনিয়নের কাজিয়ারচর খলিফাকান্দি গ্রামের, খলিফা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা মুসলিম হাই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন তিনি। পরে কলকাতা আর্ট ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন, কিন্তু আর্ট কলেজের পড়া শেষ না করে ঢাকায় চলে আসেন। তাঁর বাবা আবদুর রশিদ খলিফা তৎকালিন যুক্তফ্রন্টের সংসদ সদস্য (পালং-জাজিরা আসনে) ছিলেন। মা জহুরা খাতুন, ছিলেন গৃহিনী। তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজ। বড় বোন জোবায়দা খাতুন ছিলেন, বদরুননেসা মহিলা কলেজের ইংরেজীর অধ্যাপক। আর ছোট বোনের নাম সুফিয়া খাতুন।

আবদুল খালেক সাহেব ১৯৫২ সালে, আনোয়ারা খাতুনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের চার ছেলে-মেয়ে। বড় ছেলে মারুফ হোসেন খোকন, মেজ মেয়ে সায়রা বানু, আরেক ছেলে ওমর ফারুক টিপু, ছোট মেয়ে আজরা বানু। এরমধ্যে তাঁর বড় ছেলে ফারুক হোসেন খোকনও চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন।

আবদুল খালেক তাঁর বন্ধু বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নাজির আহমেদ-এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আসেন। স্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবি এ জে কারদার পরিচালিত “জাগো হুয়া সাভেরা” মুক্তিপায় ১৯৫৯ সালে। তিনি প্রায় ১৫০টি ছবিতে কাজ করেছেন । তাঁর কাজ করা অন্যান্য ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য- যে নদী মরুপথে, আসিয়া, দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও, কাঁচের দেয়াল, সুতরাং, তালাশ, কার বউ, ডাকবাবু, বেহুলা, মিলন, কংগন, ১৩ নং ফেকুওস্তাগার লেন, ময়না মতি, লেট দেয়ার বি লাইট, নীল আকাশের নীচে, আদর্শ ছাপাখানা, সোহাগ, বৌরাণী, দেনা পাওনা, অন্তরালে, ঘর সংসার, সানাই, প্রভৃতি।

একসময় ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও অভিজাত ফটো স্টুডিও ছিলো ‘কে ফটোগ্রাফার্স’। এই স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন বিখ্যাত আলোকিচিত্রী আব্দুল খালেক। সম্ভবত তিনিই এদেশের চলচ্চিত্রের প্রথম স্থিরচিত্রগ্রাহক। ঢাকার ওয়ারিতে তাঁর নিজ বাড়িতে ‘কাঁচের দেয়াল’ ছবির শুটিং হয়েছিল। পরবর্তিতে ‘শঙখনীল কারাগার’ ছবি’র শুটিংও তাঁর বাড়িতে হয়।

আমাদের দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের শুরুর দিকে, যাদের ঘামে-শ্রমে অবদানে এই চলচ্চিত্রশিল্প এগিয়ে গেছে, আব্দুল খালেক ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। নিভৃতচারী-প্রচারবিমুখ এই বিখ্যাত মানুষটি একসময় চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুঁটিয়ে নিয়েছিলেন। চলচ্চিত্রের কারো সাথেই তাঁর তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না। এমনকি তিনি এতো বছর যে, বেঁচে ছিলেন (৯৯ বছর বয়সে মারা যান) তাও অনেকে জানতেনই না।
‘চলচ্চিত্রের স্থিরচিত্রগ্রাহক’ হিসেবে মহিরুহ ব্যক্তিত্ব আব্দুল খালেক, নিরবে-নিভৃতে চার বছর আগে, আজকের এইদিনে চিরবিদায় নিয়েছেন পৃথিবী থেকে। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের পাতায়,
চলচ্চিত্রস্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে আব্দুল খালেক চির- অম্লান হয়ে থাকবেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

নোবেল: মডেলদের মডেল!

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন