আসিফ আকবর। বাংলা গানের যুবরাজ বলা হয় তাকে। ২০০১ সালে প্রকাশিত তার প্রথম সংগীত অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। ওই টাইটেল ট্র্যাক দিয়েই রাতারাতি পরিচিতি পান তিনি। ইদানীং পুরোনো দিনের গানের কাভারে মনোযোগী হয়েছেন। সে ধারাবাহিকতায় এবার আসিফ গাইলেন কিশোর কুমারের একটি হিন্দি গান।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আসিফ আকবর তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, শৈশব-কৈশোরে কুমিল্লায় পূজায় খুব আনন্দ করতাম। উৎসবমুখর শহরে ছিল শুধুই ভালোবাসাবাসি। সামাজিকতা ছিল সমাজের অহংকার। আজকাল দিন বদলে গেছে, ধর্মের হিসেবে মানুষ ভর্তি, বিভক্তির বিষাক্ত ছোবলে আসল মানুষ হয়ে গেছে ফসিল।
‘ঈদে পূজায় বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়ান বাংলা হিন্দি অ্যালবাম ঢুকত। শহরময় বাজত লাউড স্পিকারে, যেকোনো গানই ভালো লাগত। আকাশবাণী আগরতলা আর রেডিও শিলংয়ের কল্যাণে ভারতীয় সমৃদ্ধ মিউজিক শুনতেন ঘরের মানুষজন। সে সবের প্রভাব ছিল মারাত্মক। আমিও এর বাইরে ছিলাম না। ছোট থেকেই অমর গানগুলো শুনে বেড়ে উঠেছি।’
তিনি লেখেন, নব্বই দশকে ব্র্যান্ড সংগীতের জোয়ারে আমরা ভেসে গেলাম। নতুন ঘরানায় আপ্লুত হয়ে নিজেও ব্র্যান্ড ফর্ম করলাম কুমিল্লায়। ভুলে গেলাম পুরোনো ফাইল। আগেই চিনতাম, ঢাকায় এসে নতুনভাবে পরিচিত হলাম ব্যস্ত গিটারিস্ট পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে, তিনিই আবার আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন মহামতি কিশোর কুমারের রাজত্বে। বললেন রক বাদ দিয়ে আধুনিক গানে আসো, এখানেই তোমার ভবিষ্যৎ।
‘শুরু হলো কিশোর কুমার চর্চা, জীবনের প্রথম ভয়েস টেস্ট রেকর্ডিং তার গান দিয়েই। দশটি গান গেয়েছি অপরিপক্ব কণ্ঠে, তাই গানগুলো আর আলোর মুখ দেখেনি। পরে অভিজাত ক্লাব নাইটে গাইতে হত কিশোর কুমারের গান, আমার এক ধরনের শ্রোতাও তৈরি হয়ে গেছে সেখানে। অনেক লিজেন্ডের গান কাভার করলেও তার গান করার সাহস পাইনি। প্রয়াত সুবীর নন্দী দাদা আমাকে সবসময় বলতেন কিশোর কুমারের গান আমার গলায় ভালো আসে। বিভিন্ন রকম আসকারা পেয়ে শেষ পর্যন্ত গেয়ে ফেললাম হিন্দি মুভি ‘কালাকার’ -এর ‘নীলে নীলে আম্বার পার’ গানটি। ‘এ ট্রিবিউট টু কিশোর কুমার।’
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লেখেন, আমার ফুপাতো ভাই মনা ভাইয়া জাপান থেকে ভিসিআর এনেছিলেন ৮৪ সালের দিকে। তখনই ‘কালাকার’ সিনেমার এই গানটির প্রেমে পড়ে যাই। এবার জাবেদ আহমেদ কিসলুর সংগীতে ঝুঁকি নিয়ে গেয়ে ফেললাম কিশোর কুমারের অবিস্মরণীয় গানটি। সংগীত পরিচালক রাজা কাশেফের সৌজন্যে সৌভাগ্য হয়েছিল মূল কম্পোজার শ্রদ্ধেয় আনন্দজিকে খালি গলায় গানটি শোনানোর। তিনি প্রশংসা করার কারণে একটু প্রশ্রয় পেয়ে গাইতে চেষ্টা করলাম নিজস্ব টোনেই। গানটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত মহীরুহের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।