অভিনেতা ওমর সানী মৌসুমীকে বিয়ে করার পর খেই হারিয়ে ফেলেছেন। অর্থাৎ মৌসুমীকে বিয়ের পরেই ওমর সানী ক্যারিয়ার সামাল দিতে না পেরে মানসিক ভাবে দ্বিধায় পড়ে যায়। যার খেসারত সে মানসিক ভাবেই প্রতিনিয়ত দিচ্ছে। এমনটাই মনে করেন অভিনেত্রী নূতন। শুধু তাই নয়, ওমর সানী নায়ক নাকি মৌসুমীর জামাই, এমন প্রশ্নের উদ্রেকও ঘটেছে নূতনের ফেসবুক পোস্টে।
সম্প্রতি প্রিয়তমা শব্দটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অভিনেত্রী অঞ্জনার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা চালাচালি হয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় ওমর সানীক বুদ্ধিজীবী খেতাব দেয়ার দাবি বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন।
নূতন বলেন, ‘ওমর সানি কে বুদ্ধিজীবী খেতাব দেয়ার দাবি জানানো এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ওমর সানী আমার ছোট ভাই খুব আদরের, আমি ওরে বাংলাদেশ ফিল্মে জন্মাইতে দেখছি। এটা একটু অহংকার নিয়েই বললাম। “ইমরান” ছিলো ওর নাম এফডিসিতে আসা, কাজ করা, সব চোখের সামনেই। যাইহোক, সে তার একটা অবস্থান করেছে, অভিনেতা হয়েছে। বাম হাতে সালাম দিতো তাই বেয়াদব ভাবতাম পরে দেখলাম না ভালো ছেলে তবে ব্যাকাতেরা বাম পাশেই চলে।’
ওমর সানী রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন, ‘এমন কিছু অভ্যাস আমারও আছে। ভাবি বলে সম্মান করে আমায় আমি ভাই বলে জানি। সম্মানে তার কমতি নেই তাই দোয়া তার জন্য চিরকাল। তাকে আমি ভালোবাসি তার প্রমাণ,সানী কোনওদিন (জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার) অভিনেতা হিসেবে পেয়েছে কিনা আমি জানি না। শেষ ২০১৪ পর্যন্ত আমি জানি সে পায়নি। তা নিয়ে আমার অনেক জায়গায় আক্ষেপ ছিলো। কেনো তাকে দেয়া হয় নি? সে কি যোগ্য না, সেটা যারা দেয় তারা জানেন ভালো করে। তবে সে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য। সে সম্মাননা না পেয়ে থাকলে সে পাবে ইনশাআল্লাহ।’
মৌসুমীকে বিয়ের খেসারত দিতে হচ্ছে ওমর সানীকে- এমনটাই উল্লেখ করে নূতন বলেন, ‘সানীর জীবনে সব চেয়ে বড় পরিবর্তন ও প্রভাব আসে যখন সে মৌসুমীকে বিয়ে করে। মৌসুমীকে বিয়ের পরদিন উজ্জ্বল চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার আর, সানীর খানিকটা পড়ে যাওয়া ক্যারিয়ার সামাল দিতে না পেরে মানসিক ভাবে দ্বিধায় পড়ে যায়। যার খেসারত সে মানসিকভাবেই প্রতিনিয়ত দিচ্ছে। অনেক চড়াই উৎরাই পার তাকে হতে হয়েছে।’
অভিনেত্রী ওমর সানীর পরিচয় খুঁজতে গিয়ে বলেন, ‘যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সে সেই মানসিক খেসারত বা ভালোবাসা দেখানোর জন্য নিজের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা স্বঘোষিত মেধাবী দাবি করে বার- বার খেই হারিয়ে ফেলছে। মাঝে মাঝে আমার মনে হয় ওমর সানী কি ফিল্ম হিরো না মৌসুমির জামাই? সে কি অভিনেতা না বুদ্ধিজীবী? সে কি আইনজীবী না বিচারক? নিজের কাছে সে কি বা নিজেকে সে কি ভাবে তা হয়তো সময় বলে দিবে বা প্রকাশ পাবে।’
সাম্প্রতিক ইস্যুতে ওমর সানীর বিষয়ে নূতন লিখেছেন, ‘মানুষের অনেক গুণ থাকতে পারে। বিচারক বা বুদ্ধিজীবী হওয়ার মতো জ্ঞান হয়তো তার বিকশিত হবে বা হচ্ছে, আস্তে আস্তে। তবে আমার কাছে সে আমার ভাই, সে একজন ফিল্ম হিরো। এবার আসি মূল পর্বে। সানী নব্য একটা সেক্টর বা বুদ্ধিবৃত্তিক নামকরণ করার ঝুঁকি নিয়েছেন তার জন্য সাধুবাদ।’
প্রিয়তমা প্রসঙ্গ অবতারণা করে বলেন, ‘কিভাবে এই নামকরণ আসছে তার বিস্তারিত আমার জানা নেই। তবে সানীর থেকে এই চিন্তা এলে তাকে বুদ্ধিজীবী খেতাব দেওয়ার দাবি জানানো যেতে পারে। কারণ আমি সানীর লেখা দেখেই এই নামকরণের সাথে পরিচিত হলাম। যে ফিল্মে প্রিয়তমা। প্রিয়তমা কি? এর সংজ্ঞা কি? বা কি কি ভাবে তা হয়? বা আদৌ এই নামের কোন ব্যাখ্যা আছে কি না? তা আমার জানা নেই তবে “সানীর” নামকরনের ফর্দ দেখে মনে হলো ওই একই [যাহা ফাইভ তাহাই পাঁচ]।’
ওমর সানীর দ্বিধাগ্রস্থতা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী ফের বলেন, ‘যাইহোক, এ স্ববিচারিক প্রক্রিয়ার বিপরীত প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন আমার বন্ধু সুপারস্টার অঞ্জনা। অঞ্জনা যে বিষয় নিয়ে রাগ করেছে বা অভিমান প্রকাশ করেছে তা নিয়ে আমি মোটেও বিচলিত নই। কারণ এই নামকরণের ভিত্তি কতটা তা আমার জানা নেই। আর ৫০ বছর চলচ্চিত্র জীবনে আমি এই নামের অস্তিত্ব পাইনি। বা সানী হয়তো- ওই যে বললাম মানসিকতার খেসারত দেয়ার মধ্যে আছে তাই। এমন একটা চিন্তার উদ্ভব ঘটিয়েছেন।’
নতুন প্রজন্মকে সঠিক তথ্য জানানোর জন্য এই পোস্ট উল্লেখ করে নূতন বলেন, ‘সেটা যে যার মতো অভিব্যক্তি,মতামত প্রকাশ করতেই পারেন। কে কাকে উচ্চতর আসনে বসাবেন কাকে বসাবেন না সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমি এই লেখায় ঘোষিতভাবে দ্বিমত প্রকাশ করার একটাই কারণ। অনেক নতুন প্রজন্ম আছেন তারা সঠিক কিছু জানতে চায়, তারা ফিল্মের মানুষদের ভালোবাসে, বিশ্বাস করে তাই তাদের সঠিক কিছু জানা দেয়া জরুরি।’
ভেবে চিন্তে বলতে হয়- ওমর সানীকে এমন পরামর্শ দিয়ে নূতন বলেন, ‘তবে আরও অনেক আছে যাদের নাম ভেবে চিন্তায় নিতে হয় সেই ভাবনা চিন্তার জ্ঞানের পরিধি তোমার সীমিত। যেহুতু তোমার কিছু ফেসবুক অনুসারী আছে তারা না বুঝে সায় দেয় তাই তাদের সঠিক কিছু জানাও যেন তারা ভুল না জানে। আর নিজে জেনে নাও। তা না হলে কর্মের ফলে কিছু দিন বছরও না তোমার নাম ভুলে যাবে। এবং মৌসুমীর অসম্মান হবে। তোমার নাম ভুলে যাক তা আমি চাই না,মৌসুমীর ওপর কারো বিরুপ ধারণা জন্মাক তাও চাইনা। আমি তোমায় অনেক অনেক ভালোবাসি। আই লাভ ইউ আমার ভাই চলচ্চিত্র অভিনেতা ওমার সানি।’