এক সময়ের লোকছবির জনপ্রিয় নায়ক মান্নান-এর ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৪ সালের ৫ ডিসেম্বর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। প্রয়াত এই গুণী অভিনেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
মান্নান (শেখ আবদুল মান্নান)১৯৩৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী, সিরাজগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহন করেন। ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। একসময় ঢাকায় এসে মঞ্চনাটকের সাথে যুক্ত হন।
আলী মনসুর, নারায়ণ চক্রবর্তী, মোহাম্মদ আনিস- এদের সঙ্গে বহু নাটকে ঢাকার বিভিন্ন মঞ্চে অভিনয় করেছেন তিনি। পরবর্তিতে বিসিক-এ চাকরি করার সুযোগ পান শেখ আবদুল মান্নান। চাকরির কারণে বিসিক-এর বিভিন্ন নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি।
শেখ আবদুল মান্নান ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, এস এম পারভেজ পরিচালিত উর্দ্দু ছবি ‘কাঁরওয়া’য় ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে আসেন। এরপরে ১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, সফদার আলী ভূঁইয়া পরিচালিত ‘রহিম বাদশাহ ও রূপবান’ ছবিতে ‘মান্নান’ নাম নিয়ে, নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন। এই ছবিতে তিনি গানও গেয়েছেন।
মান্নান রোমান্টিক নায়ক হিসেবে ১০/১২টি ছবিতে সাফল্যের সাথে অভিনয় করেছেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন ছবিতে নানাবিধ চরিত্রে কাজ করেছেন এই গুণি অভিনেতা।
তাঁর অভিনীত অন্যান্য ছবিগুলোর মধ্যে- গুনাই বিবি, জরিনা সুন্দরী, কাঞ্চন মালা, রাখাল বন্ধু, রূপকুমারী, চম্পাকলি, মলুয়া, রূপবানের রূপকথা, পাতালপুরীর রাজকন্যা, ভাগ্যচক্র, পরশমণি, অরুণ বরুণ কিরণমালা, মালা, স্বামী, হীরা, জিঘাংসা, ঘর জামাই, ঈমান, আল- হেলাল, নাগরাণী, মাটির কোলে, সালতানাৎ, সুপার স্টার, রঙ্গীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা, লালমেম সাহেব, ঝিনুক মালা অন্যতম।
চলচ্চিত্র ছাড়াও বেতার, মঞ্চ এবং টেলিভিশনেও সমানতালে অভিনয় করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ষাটের দশকের লোককাহিনীর ছবি মানেই ছিল গানের ছড়াছড়ি । আর এসব ছবির জনপ্রিয় রোমান্টিক নায়ক ছিলেন মান্নান। একসময়ে বাংলাদেশে পোশাকী-ফোক ছবির জনপ্রিয়তা ছিল খুব।
আর এসব ছবিতে অভিনয় করে, তখনকার সময়ে গ্রামবাংলার সিনেমাদর্শকদের মাঝে খুবই জনপ্রিয় হয়ে ছিলেন, এই অভিনেতা।
তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি কয়েকটি ছবিতে গানও গেয়েছিলেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নায়ক-অভিনেতা মান্নান-এর অবদান অনস্বীকার্য।