উচ্চতা কম হলে যেমন বাজে পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, তেমনি উচ্চতা বেশি হলেও বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। শুধু যে সাধারণ মানুষই এসব পরিস্থতির শিকার হন তা নয়, শোবিজের তারকারাও পড়েন বিপদে। এমনকি নানান সমালোচনা কিংবা কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাদের। বর্তমানে মাঝে মধ্যেই এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েন দেশের জনপ্রিয় তিন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম, মৌসুমী হামিদ ও জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি।
মিমের উচ্চতা ৫ ফুট সাড়ে ৮ ইঞ্চি। স্কুলে বরাবরই ক্লাসে পেছনে গিয়ে বসতে হতো তাকে। কারণ, উচ্চতার জন্য সামনে বসতে ইচ্ছা করলেও সেটা সম্ভব ছিল না।
এ প্রসঙ্গে মিম বলেন, আমি ছোট থেকেই অনেক লম্বা। যে কারণে বন্ধুমহলে যেকোনো কিছুতে আমাকে সবার শেষে থাকতে হতো। চাইলেও কখনও সামনের সারিতে বসতে পারতাম না। বসলেও শুনতে হতো মাথা নিচু করো, দেখা যায় না।
স্কুলে লাইন ধরে যখন পিটি করতাম, তখনও আমি শেষে। এখনও বন্ধুরা আমার যত গ্রুপ ছবি পাঠায়, সেখানে আমি শেষে। যে স্কুল ও কলেজে পড়েছি, আমি ছিলাম উচ্চতায় সবার বড়।
আমাকে সবাই ‘ওই লম্বা মেয়ে’ বলেই বেশি ডাকতো। যখন সবাই একসঙ্গে কোনোকিছু শিখতে যেতাম, তখন উচ্চতার জন্য আমার অবস্থান থাকত পেছনে।
বোঝেনই তো যাদের মনোযোগ কম, তারা পেছনে অংশ নিতেন। এরমধ্যে আমাকে মনোযোগী হয়ে সামনে তাকিয়ে থাকতে হতো। সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকত। এ নিয়ে বিব্রত হতে হতো। অনেকে আমাদের খ্যাপানোর চেষ্টা করতেন।
উচ্চতা নিয়ে বিপাকের শেষ নেই অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদের। কারণ, তার উচ্চতা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি। অভিনেত্রীর উচ্চতা বেশি হওয়ায় অনেক নির্মাতা তাকে নিয়ে কাজ করতেও বিপাকে পড়েন।
এমনকি বিয়ের জন্যও ছেলে খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মৌসুমীকে। বলা যায়, বিয়ের জন্য ছেলেই খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। বেশি লম্বা হওয়ার কারণে শোবিজপাড়ায় তালগাছ নামে ডাকা হয় এই অভিনেত্রীকে।
মৌসুমী বলেন, উচ্চতা বেশি হওয়ায় প্রায়ই শুটিংয়ে তাকে শুনতে হতো এই নিচু হও, নিচে দাঁড়াও, বাঁকা হও, খালি পায়ে হাঁটো এমন নানা কথা। মৌসুমী বলেন, ‘শৈশব থেকে আমি অনেক দুরন্ত ছিলাম। গ্রামে ছুটে বেড়াতাম। সাইকেল চালাতাম। ছেলেদের মতো চলাফেরা করতাম। দুষ্টুমি করতাম। আমার উচ্চতা বেশি ছিল। এসব কারণে অনেকে কিছু বলত না। অনেকেই তার উচ্চতা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাতেন। এ নিয়ে শুটিংয়ে তার মন খারাপ হয়েছে। তবে তিনি সবসময় ব্যালান্স করে অভিনয় করতে চান।
ছোট পর্দার বর্তমান সময়ের ব্যস্ত অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমির উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। অভিনেত্রী বলেন, উচ্চতা নিয়ে মাঝে মধ্যে কী যে বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। এই ধরেন, আমি কোনো লিফটে উঠলাম। সেখানে সবাই প্রথমে আমার মুখের দিকে না তাকিয়ে আমার পায়ের দিকে তাকায়। প্রথমে তারা দেখে আমি হিল পরে আছি কি না। তখন কী যে বিব্রত লাগে। মনে হয় কেন আমার উচ্চতা এত বেশি।
তিনি বলেন, ক্যারিয়ার শুরুর দিকে একটি নাটকে আমি ছিলাম গ্রামের সাধারণ গৃহিণী। সেখানে আমার স্বামীর চরিত্রের অভিনেতার উচ্চতা আমার চেয়ে কম। তখন দুই পা ছড়িয়ে দাঁড়াতে হতো। এভাবেই সংলাপ দিতে হতো।
আবার কখনও ফ্রেম ছোট করে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হতো। আবার দেখা যেত, কোনো দৃশ্যে রিকশা থেকে নেমে শট দিতে হবে। দেখা গেল লম্বার ঝামেলা এড়ানোর জন্য রিকশায় বসেই শট দিলাম। এসব নিয়ে অনেক সময় নিরাপত্তাহীনতা বোধ করতাম। এখন আমিও অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এসব নিয়ে মজা বেশি হয়।