ইরানে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে মিথ্যা প্রচারনার অভিযোগে দেশটির বিখ্যাত অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশব্যাপী বিক্ষোভের বিষয়ে মিথ্যা প্রচারের অভিযোগে শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) ইরানি কর্তৃপক্ষ অভিনেত্রীকে গ্রেপ্তার করে।
ইরানি গণমাধ্যম ইরনা-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্কার বিজয়ী সিনেমা ‘দ্য সেলসম্যান’-এর তারকা তারানেহ আলিদুস্তি ইনস্টাগ্রামে ইরান সরকারের সমালোচনা করে একটি পোস্ট করেন। ইরানে বিক্ষোভ চলাকালীন সময় অভিযুক্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম ব্যক্তি মুহসিন শিকারির সাথে সংহতি প্রকাশ করে এই পোস্টটি করেছেন তিনি। পোস্টটি করার এক সপ্তাহ পরেই তারকাকে আটক করা হয়।
রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আলিদুস্তি তার দাবির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোনো নথি প্রদান করতে পারেননি। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু প্রকাশের জন্য আরো বেশ কিছু ইরানী তারকাকে তলব করেছে বিচার বিভাগ। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ”
এর আগে তারানেহ আলিদুস্তি ইরানে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মুহসিনকে নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “তার নাম ছিল মুহসিন শিকারি। প্রতিটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যারা এই রক্তপাত দেখছে অথচ পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তারা মানবতার জন্য কলঙ্ক। ”
ইরানে নারীদের প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভে তেহরানের একটি রাস্তা অবরুদ্ধ করা এবং দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্যকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় মুহসিন শিকারিকে। ইরানের একটি আদালত তাকে অভিযুক্ত করার পর ৯ ডিসেম্বর মুহসিনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সেই মুহসিন শিকারির মৃত্যুদন্ডের প্রতিবাদেই আওয়াজ তুলেছিলে অভিনেত্রী তারানেহ।
এর আগে নভেম্বরে, হেঙ্গামেহ গাজিয়ানি এবং কাতায়ুন রিয়াহি নামে অন্য দুই বিখ্যাত ইরানী অভিনেত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদকারীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য ইরান প্রশাসন গ্রেপ্তার করে তাদের। ইরানের ফুটবলার ভোরিয়া গাফৌরিকেও গত মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল জাতীয় ফুটবল দলকে অপমান এবং সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তিনি। যদিও তিনজনকেই পরবর্তীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।